নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রথমে মোটর সাইকেল চুরি। তারপর সেটাই অ্যাপ নির্ভর বাইক পরিষেবায় ব্যবহার। তাও আবার যতক্ষণ ট্যাঙ্কে তেল, ততক্ষণ সওয়ারি নিয়ে রাইড। যেখানে তেল শেষ, সেখানে শেষ রাইডও। ফের নতুন বাইক চুরি। অভিনব এই কায়দাতেই চলছিল দৈনিক রোজগার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। একটি অ্যাপ বাইক সংস্থার চালক হিসেবে নাম নথিভুক্ত থাকা ইমরান ধরা পড়ে গেল লালবাজারের হাতে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে হরিদেবপুর ও সিঁথি এলাকায় বাইক চুরির ঘটনা ঘটে। হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকা থেকেও পরপর দুটি বাইক চুরি যায়। তদন্তে নামে লালবাজার। ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। দেখা যায়, একজন বাইক চুরির পর চালিয়ে পালাচ্ছে। বাকি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বোঝা যায়, সবক’টি ঘটনায় একই ব্যক্তি জড়িত। চিহ্নিত করা হয় ওই যুবককে। জানা যায়, অভিযুক্তের নাম ইমরান নাজির। এন্টালির বাসিন্দা। মোবাইলের সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার হয়।
ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য উঠে আসে, তাতে চমকে যান তদন্তকারীরা। পুলিসকে সে জানায়, চোরাই বাইকে সওয়ারি নিয়ে যাওয়াই তার কারবার। অ্যাপ সংস্থায় তার যে বাইকের নম্বর দেওয়া আছে, সেটিও চুরি করা বাইক। ইমরান জানিয়েছে, পুরনো বাইক ছিল তার টার্গেট। যাতে নকল চাবি দিয়ে সহজেই খুলে ফেলা যায়। তাতে দেখে নিত ট্যাঙ্কে ঠিক কতটা তেল রয়েছে। সেই অনুযায়ী হিসেব করে যাত্রীর বুকিং নিত। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনোর পর তেল শেষ হয়ে গেলে, বাইকটি সেখানেই ফেলে দিত। এরপর ওই এলাকা থেকে আরেকটি বাইক চুরি করে পরবর্তী যাত্রীর বুকিং। হাওড়া ও কলকাতা এলাকাতেই সে বেশি বুকিং ধরত।
জানা যাচ্ছে, তার একটি দল রয়েছে। যারা অ্যাপ বাইক চালায়। তাদেরও চোরাই বাইক সরবরাহ করত সে। চুরি করা অল্পকিছু বাইক সে বিক্রি করত ভিন রাজ্যের গ্যাংয়ের কাছে। কলকাতা ও হাওড়া থেকে একই কায়দায় বিগত ছ’মাসে ২০টিরও বেশি বাইক চুরি করে ইমরান। আপাতত চারটি বাইক উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকিগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।