• বাসুলিয়া-পূর্ব শ্রীকৃষ্ণপুর যুব সঙ্ঘের পুজোয় এলেই মিলছে নতুন পোশাক  
    বর্তমান | ০৯ নভেম্বর ২০২৪
  • শ্যামল সেন, হলদিয়া: মণ্ডপে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে এলেই মিলছে নিজের পছন্দমতো নতুন জামাকাপড়। আধুনিক ডিজাইনের আকর্ষণীয় চুড়িদার, ফ্রক, টু-পার্ট, ছোটদের বাবা-স্যুট, বড়দের টি-শার্ট কী নেই সেখানে! মণ্ডপ প্রাঙ্গণেই হরেক রকমের জামাকাপড়ের পসরা। পুজো কমিটির দেওয়া কুপন দেখিয়ে আর্থিক সঙ্গতি নেই এমন মানুষজন নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন নতুন জামাকাপড়। হলদিয়া পুরসভার-২ নম্বর ওয়ার্ডে বাসুলিয়া-পূর্ব শ্রীকৃষ্ণপুর যুব সঙ্ঘ সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী উৎসব উপলক্ষ্যে এমন অভিনব আয়োজন করেছে। উৎসব মরশুমে নানা বয়সের মানুষের জন্য এমন অসাধারণ উদ্যোগে সাড়া পড়েছে হলদিয়ায়। ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তারা বলেন, পুজো মানেই নতুন জামার গন্ধ। উৎসবে সবাই বড়দের জন্য ভাবেন। কিন্তু, ছোটদের মুখে হাসি ফুটলে উৎসবের আনন্দ পূর্ণতা পায়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পুজো কমিটি সবাইকে সম্মানের সঙ্গে পছন্দের উপহার তুলে দিতে পেরে খুশি। দর্শনার্থী ও পুজোয় আগত অতিথিরা যুব সঙ্ঘের অভিনব উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।


    শহরের রাস্তা ছাড়িয়ে ছবির মতো সাজানো গ্রামীণ এলাকায় যুব সঙ্ঘের জগদ্ধাত্রী পুজো দর্শনার্থীদের মন টেনে নেয়। গাছগাছালি ঘেরা সবুজের মধ্যে বিশাল এক পুষ্করিণীর পাশে যুব সঙ্ঘের দোতলা ক্লাবঘর। তার অপর পারে জগদ্ধাত্রী পুজোর বারোয়ারি ধাঁচের মণ্ডপ। এবার যুব সঙ্ঘের প্রতিমা গড়েছেন ইছাপুরের শিল্পী কালীপদ জানা ও সুভাষ জানা। আকর্ষণীয় প্রতিমা দেখতে প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জমছে। পুজো কমিটির যুগ্ম সভাপতি রাজীব হাজরা এবং যুগ্ম সম্পাদক তন্ময় ভৌমিক বলেন, এবার ২১তম বর্ষে পুজোর বাজেট ১২ লক্ষ টাকা। পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে সামাজিক দায়বদ্ধতায় জোর দেওয়া হয় বেশি করে। সঙ্গতিহীনদের জন্য পছন্দমতো উপহার দেওয়ার রীতি রয়েছে উৎসবে। শুক্র ও শনিবার সপ্তমী ও অষ্টমীর সন্ধ্যায় ২০০জনকে এই উপহার দেওয়া হচ্ছে। সপ্তমীর বিকেলে আমন্ত্রণমূলক সারা বাংলা যোগাসন প্রতিযোগিতায় দেড় শতাধিক নানা বয়সের প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন করেন সতীশ সামন্ত চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সম্পাদক মিলন মণ্ডল। ষষ্ঠীর সকালে যুব সঙ্ঘের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা মণ্ডপে আনার সময় লোকশিল্পীদের নিয়ে শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় করেন কয়েক হাজার মানুষ। 


    ক্লাব সভাপতি সমর হাজরা, ক্লাব সম্পাদক প্রশান্ত সাহু বলেন, এবার মাধ্যমিক ও উচ্চামাধ্যমিকের ১২জন কৃতীকে বিশেষ সম্মান জানিয়েছে পুজো কমিটি। এছাড়া কয়েকজন গুণী মানুষকে সামাজিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মান দেওয়া হয়েছে। শনিবার অষ্টমীর দুপুরে হচ্ছে কুমারীপুজো। যোগাসনে আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত হলদিয়া ও সুতাহাটার তিন কিশোর কিশোরীকেও সম্মান জানানো হচ্ছে। রবিবার নবমীতে সকাল থেকে রয়েছে লায়ন্স ক্লাবের সহযোগিতায় হেল্থ ক্যাম্প। এছাড়াও রয়েছে আঁকা প্রতিযোগিতা, ছদ্মবেশ প্রতিযোগিতা এবং সোমবার দশমীর দুপুরে তিন হাজার মানুষকে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হবে। অষ্টমীর সন্ধ্যায় আসছেন শিল্পী জয়জিৎ অধিকারী। নবমীতে রয়েছে কলকাতার একটি ট্রুপের বিচিত্রা অনুষ্ঠান এবং অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ। 


    ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ দিলীপ হাজরা বলেন, যুব সঙ্ঘ সারা বছর ধরে সামাজিক কাজ করে। ক্লাবে বিবেকানন্দ হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় থেকে প্রতি সোমবার পরিষেবা দেওয়া হয়। ফ্রি যোগা অ্যাকাডেমি, নাচ ও আঁকা শেখানোর জন্য সরস্বতী অ্যাকাডেমি চালু আছে। যুব সঙ্ঘের মাসিক রেডিমেড পোশাক প্রকল্প এলাকায় খুবই জনপ্রিয়।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)