পুলিশ সূত্রের খবর, রাজারহাটের শিখরপুরের ঝালিগাছিতেনিমাইয়ের ওই নার্সারিটি তাঁর স্ত্রী টগরী ও ছেলে বাপি দেখাশোনা করেন। সেখানে নানা ধরনের বাহারি এবং মরসুমি ফুল ও ফলের গাছ পাওয়া যায়। শুভ দু’বছর ধরে সেখানে কাজ করছিলেন। তাঁর বাড়ি ভাঙড়ের গাজিপুরে। শুভর বাবা দিলীপ সর্দার জানালেন, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নার্সারিতে শ্রমিকেরা কাজ করেন। শীতের সময়ে ফুলের চাহিদা বাড়ে, তাই বর্তমানে রাত ৯টা পর্যন্ত নার্সারিতে কাজ চলছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুভর সঙ্গে আরও চার যুবক ওই বাগানে কাজ করছিলেন।
পুলিশ জানায়, চোরের উৎপাত ঠেকাতে বেড়াগুলি যে বিদ্যুদয়িত করে রাখা হয়েছে, শুভ তাজানতেন। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে ভুলবশত সেই বেড়াতেই হাত দিয়ে ফেলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যান। কর্মরত অন্য শ্রমিকেরা শুভকে দ্রুত উদ্ধার করে রাজারহাটের রেকজোয়ানি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে শুভকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
শুভর বাবা জানান, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এক অপরিচিত যুবক ফোন করে তাঁর ছেলের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার খবর দেন। সেই খবর পেয়েদিলীপ রেকজোয়ানি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দেখেন, শুভর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়েরা জানান, দিলীপ সেখান থেকে বাড়িতে ফোন করে জানান, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু সেই সময়ে নার্সারির মালিকের ছেলে বাপি দিলীপের ফোনটি কেড়ে নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। তাতেই দিলীপ ও তাঁর পরিবারের মনে শুভর মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ আরও জোরালো হয়।এর পরে শুভর পরিবার রাতেই রাজারহাট থানায় নার্সারি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে নিমাই ও টগরীকে গ্রেফতার করে। আজ, শনিবার তাঁদের বারাসত জেলা আদালতে পেশ করা হবে বলে খবর।
বাড়ির একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার ও প্রতিবেশীরা। বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন শুভর মা। দিলীপ বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে ওরা চক্রান্ত করে খুনকরেছে। না হলে মোবাইল কেড়ে নিয়ে পালাবে কেন? দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’