আবাস যোজনার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, হাইকোর্টে কার্যত মেনে নিল রাজ্য
আজ তক | ০৯ নভেম্বর ২০২৪
আবাস যোজনায় দুর্নীতির কথা কার্যত আদালতে মেনে নিল রাজ্য সরকার। এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দড়ি টানাটানি অব্যাহত। অভিযোগ, রাজ্যে শাসক দলের নেতা কর্মীদের পকেটে আবাস যোজনার টাকা যায়। সেই অভিযোগই কার্যত প্রমাণ হয়ে গেল আদালতে। আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে ক্যানিংয়ের বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য কোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি রবি কৃষণ কাপুরের। পাশাপাশি পঞ্চায়েত দফতরের সচিবকে এই ঘটনায় ফৌজদারি মামলা রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি রবি কিষণ কাপুরের মন্তব্য, 'এটা ইচ্ছাকৃত দুর্নীতি।'
২০২১ সালে আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য আবেদন করেন ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ বাসিন্দা। দীর্ঘদিন টাকা না আসায় তাঁরা পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন। পঞ্চায়েত থেকে জানানো হয় যে তাঁদের টাকা আসেনি। পরে জানানো হয় যে তাঁরা এই টাকা পাওয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তি নন। ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়। স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়ার আর্জি জানানো হয়।
মামলায় রিপোর্ট দিয়ে রাজ্য এদিন জানায়, মামলাকারী ৫ জনের মধ্যে ৩ জনের নামে নামে তিনটে কিস্তিতে টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে, সেই টাকা আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে না গিয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। বাকি ২ জনের প্রথম কিস্তির টাকাও অন্য অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। মামলাকারী সিরাজুল ইসলাম সহ অন্যদের অভিযোগ, নামে আসলেই অন্য অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা ঢুকেছ। তারপরেই স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্তের আবেদন জানিয়ে দায়ের হয় মামলা। মামলাকীদের বক্তব্য, পঞ্চায়েতের মাধ্যেম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেতে তাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন। প্রয়োজনীয় নথিও আবেদনের সঙ্গে জমা করেন। যদিও পরে দেখতে পান তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর পরবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। টাকা অন্যরা পেয়েছে।
আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা আবাস যোজনার টাকা ভুয়ো ব্যক্তিদের নামে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ ব্যাপারে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, 'রাজ্য সরকার কার্যত স্বীকার করে নিল আবাস যোজনায় দুর্নীতি করা হয়েছে। সেই জন্য পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাঙ্কের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে তারা কাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছে সেটা জানাতে। একইসঙ্গে অবিলম্বে পঞ্চায়েত দফতরের সচিবকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।