মহিলা নৃত্যশিল্পীকে জামা খুলে নাচার কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অর্থাৎ জামা খুলেই নাচতে হবে একেবারে হট নাচ বলে অভিযোগ। আর এই কুপ্রস্তাবে রাজি হননি ওই নৃত্যশিল্পী। এমন কুরুচিকর অশ্লীল প্রস্তাব এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের ঠেকুয়া বাজার সংলগ্ন একটি ক্লাবের বিনোদনের অনুষ্ঠান থেকে। শিল্পীদের কাছে এই আবদার করেন ক্লাবের সদস্যরা বলে অভিযোগ। সোনার বাংলা ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন শিল্পীরা। কিন্তু তাতে রাজি হননি নৃত্যশিলী সদস্যরা। তখন নৃত্যশিল্পীদের জোর করে জামা খুলিয়ে অশ্লীল নাচ করানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। আর তাতে বাধা দিতেই নৃত্যশিল্পীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল ক্লাব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে নন্দকুমার এলাকায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সোনার বাংলা ক্লাবের সদস্যরা নৃত্যশিল্পীদের অশ্লীল নাচ করার জন্য চাপ দিতে থাকে। অশ্লীল নাচ করতে রাজি না হওয়ায় এবং প্রতিবাদ করলে অশালীন আচরণ করা হয়। এমনকী পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা নৃত্যশিল্পীদের পর্যন্ত মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আহত নৃত্যশিল্পীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান করতে এসে এমন নিগ্রহের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে শিল্পী সংগঠন বিএসএফইউ’র সভাপতি প্রবীণ পট্টনায়কের মাধ্যমে তখন নন্দকুমার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নন্দকুমার থানার পুলিশ। তারপর নৃত্যশিল্পীদের ওখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তাঁদের অভিযোগ জমা পড়তেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মহিলা নৃত্যশিল্পীরা হাতজোড় করে মুক্তি চাই ছিলেন ক্লাব সদস্যদের কাছে। তাঁদের জামাকাপড় খুলে নেওয়ার চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকার জন্য কাকুতি–মিনতি করছিলেন বলে অভিযোগ।
এছাড়া অনেক অনুনয়–বিনয় করলেও ক্লাব সদস্যরা মহিলা নৃত্যশিল্পীদের পোশাক খুলেই নাচতে চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৃত্যশিল্পী বলেন, ‘তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানে ৫ ঘণ্টা আমাদের জোর করে ধরে রাখা হয়েছিল। হঠাৎই আমাদের অশ্লীল নাচ করতে চাপ দেওয়া শুরু হয়। তাতে আমরা রাজি না হওয়ায় আমাদের সকলকে মারধর করা হয়। মহিলাদেরও ছাড় মেলেনি। অবশেষে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। আমরা তারপর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’