চার দিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার রাতে পৃথ্বীরাজের দেহ উদ্ধার হয় দলীয় কার্যালয় থেকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই দলীয় নেতাকে খুনের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। এর পরেই তদন্তে নেমে শনিবার সুজাতা পোদ্দার নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, পৃথ্বীরাজকে খুনের কথা কবুল করেছেন সুজাতা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বিজেপি নেতার। ছ’বছর তাঁরা প্রেম করেছেন। সম্প্রতি পৃথ্বীরাজ একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তা নিয়ে কথা বলতেই বিজেপির পার্টি অফিসে পৃথ্বীরাজের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলে তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সুজাতার বক্তব্য, পার্টি অফিসে বিজেপি নেতা জোর করে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন। বাধা দিতে গিয়েই টেবিলে পড়ে থাকা ব্লেড দিয়ে পৃথ্বীরাজের যৌনাঙ্গে আঘাত করেন তিনি। গত সোমবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পৃথ্বীরাজের ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন দে বলেন, ‘‘বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি আমরা। টাওয়ার লোকেশন ঘটনার সময় একই ছিল।’’
কয়েক বছর আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। তিনি বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশ্যাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্বে ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃথ্বীরাজের কাছে সব সময় তিনটি ফোন থাকত। রবিবার তাঁর বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান ছিল। বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছিলেন তিনি। তার পর সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। আর ফেরেননি। তাঁর তিনটি ফোনেই বাড়ি থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন বেজে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ফোনটি কখনও চালু থাকছিল, কখনও তা বন্ধ করে রাখা হচ্ছিল।
দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল পৃথ্বীরাজের পরিবার। তার পর শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যেরা জানতে পারেন, দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে তাঁর দেহ পড়ে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয় দেহ। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে।