সংবাদদাতা, কাটোয়া: ঝাড়খণ্ড থেকে চারচাকা গাড়ি করে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ঢুকছিল বিপুল পরিমাণ গাঁজা। আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটিকে পাকড়াও করে পূর্ব বর্ধমান জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। গাড়ির ডিকি খুলতেই চক্ষু চড়ক গাছ পুলিস অফিসারদের! থরে থরে সাজানো প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া গাঁজা। প্রায় ৯৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিস জানিয়েছে। তবে গাড়ি থেকে নেমে দুই কারবারি পালিয়ে যায়।
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার(সদর) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে আউশগ্রাম থানার পুলিসকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। তাতেই বিপুল গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। আউশগ্রাম থানায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কারবারে যুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে জেলা পুলিসের বিশেষ টিম আউশগ্রাম থানার পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলমহলের সমস্ত রাস্তা ঘিরে ফেলে। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে সাদা চারচাকা গাড়িটি আসানসোল, কাঁকসা হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ঢোকে। সেখানে আউশগ্রাম থানার মোড়বাঁধের রাস্তা ধরে ছোড়া এলাকা দিয়ে ভেদিয়ায় ২ বি জাতীয় সড়কে ওঠে। ভেদিয়ার কাছে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিস নাকা শুরু করে। বাগবাটি আসতেই গাড়িটিকে আটকানো হয়। পুলিস দেখেই দু’জন গাড়ি থেকে মাঠ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পিছু ধাওয়া করলেও তাদের নাগাল পাওয়া যায়নি। তবে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া ও কয়েকটি বস্তা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ওড়িশা, নাগাল্যান্ড, মণিপুর থেকে গাঁজা আসে এ রাজ্যে। রাজ্যে গাঁজা ঢোকার দু’টি করিডর রয়েছে। মণিপুর, নাগাল্যান্ডের গাঁজা আসে উত্তরবঙ্গ করিডর ব্যবহার করে। মণিপুর বা নাগাল্যান্ড থেকে গাঁজা আসে শিলিগুড়ি হয়ে আন্তঃরাজ্য রেলপথে। তা আবার নদীয়া জেলার নবদ্বীপ স্টেশনে আসে। সেখান থেকে গাঁজা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সাপ্লাই হয়। এরজন্য নির্দিষ্ট সাপ্লায়ার্স রয়েছে। এমনকী মহিলা সাপ্লায়ার্সও ব্যবহার করা হয়। আর ওড়িশার বোলাঙ্গির জেলার গাঁজা আসে সড়ক পথে। ওড়িশা থেকে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত দিয়ে আসানসোল, কাঁকসা হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে যায়।
দু’দিন আগে আসানসোলের পাঞ্জাবি মোড়ে মাছের পেটির আড়ালে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে পুলিস দু’কুইন্টাল গাঁজা উদ্ধার করে। ওই গাঁজা মেদিনীপুরের বেলদা থেকে বীরভূমের দুবরাজপুর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ধরা পড়ার ফলে পাচারকারীরা বীরভূমে গাঁজা নিয়ে যেতে পারেনি। এই গাঁজাও আউশগ্রামের জঙ্গলমহল দিয়ে বীরভূম যাচ্ছিল কি না পুলিস খতিয়ে দেখছে। • নিজস্ব চিত্র