একাধিক মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক! পার্টি অফিসে গোপনাঙ্গ কেটে বিজেপি নেতাকে খুন, ধৃত প্রথম প্রেমিকা
বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিজেপি পার্টি অফিস। ভিতরে একদিকের দেওয়ালজোড়া নরেন্দ্র মোদির ফ্লেক্স। ছড়িয়ে ছিটিয়ে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ। ঘরের ঠিক মাঝখানে কয়েকটি বেঞ্চ একজায়গায় করা। তার উপরেই চাদরে ঢাকা অবস্থায় পড়ে বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ। গোপনাঙ্গ কেটে তাঁকে খুন করা হয়েছে। মৃতের নাম পৃথ্বীরাজ নস্কর (৩৪)। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশ্যাল মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক। প্রায় চারদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। শেষপর্যন্ত শুক্রবার মধ্যরাতে উস্তি থানার দ্বীপের মোড় এলাকায় তালাবন্ধ পার্টি অফিসের ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিস। কীভাবে সেখানে এল নেতার দেহ? এ নিয়ে তৈরি হয় রহস্য। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে রাজনীতির রঙ লাগানোর চেষ্টা করে বিজেপি। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। বেলা হতেই রহস্যভেদ করেছে ডায়মন্ডহারবার পুলিস জেলা। তদন্তে জানা গিয়েছে, একাধিক মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কই কাল হয়েছে পৃথ্বীরাজের। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে খুন হয়েছেন এই বিজেপি নেতা। এই ঘটনায় জড়িত তাঁরই প্রথম প্রেমিকা। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতের নাম সুজাতা পোদ্দার। এলাকায় তিনি বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত। জেরায় সুজাতা পুলিসকে জানিয়েছেন, ব্লেড দিয়ে গোপনাঙ্গ কেটে ওই নেতাকে খুন করেছেন তিনি।
তদন্তে উঠে এসেছে, শুধু সুজাতা নয়, চলতি বছরে আরও এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। এছাড়াও অনেকের সঙ্গেই তাঁর শারীরিক সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে প্রথম প্রেমিকার সঙ্গে টানাপোড়েন লেগেই ছিল। অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে পৃথ্বীরাজের সম্পর্ক মেনে নেননি সুজাতা। ওই নেতাকে বারেবারে বুঝিয়েছিলেন। সোমবার রাতেও পৃথ্বীরাজের সঙ্গে পার্টি অফিসে দেখা করতে আসেন তিনি। তখন নেশায় বুঁদ হয়েছিলেন বিজেপি নেতা। তাঁর সঙ্গে জোর করে সহবাস করার চেষ্টাও করেছিলেন। সেই সময় সুজাতা সাফ জানায়, দ্বিতীয় মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা চলবে না। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তখনই আচমকা পৃথ্বীরাজের গোপনাঙ্গ তিনি ব্লেড দিয়ে কেটে দেন বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয় পৃথ্বীরাজের। এরপর তাঁর তিনটি মোবাইল নিয়ে সেখান থেকে নিঃশব্দে বেরিয়ে যান সুজাতা। ফোনগুলি পরদিন আশপাশের জঙ্গলে ও পুকুরে ফেলে দেন।
পুলিস জানিয়েছে, ওই পার্টি অফিসের ভিতরে পৃথ্বীরাজের দেহ রক্তমাখা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল। দেহে পচন ধরেছে। বেঞ্চের নীচে রক্ত শুকিয়ে কালচে হয়ে জমাট আকার ধারণ করেছিল। এদিন ময়নাতদন্ত হয়। খুনের তদন্তে নেমে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিস। ওই পার্টি অফিসে প্রায়শই মহিলাদের নিয়ে আসতেন পৃথ্বীরাজ। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার (জোনাল) মিতুনকুমার দে বলেন, ‘এই ঘটনায় কোনও রাজনীতি নেই। একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মৃতের। এসবের টানাপোড়েনের জেরেই খুন। এক মহিলা গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি তাঁর দোষ স্বীকার করেছেন।’