নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমীর দুপুর থেকেই ভিড় উপচে পড়ল চন্দননগর, ভদ্রেশ্বরে। শনিবার দুপুরে দফায় দফায় শহরে যানজট হয়েছে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লেগেছে ৪৫ মিনিট। চন্দননগরের স্টেশন রোড থেকে দৈবকপাড়ার রাস্তা, উর্দিবাজার থেকে উত্তরাঞ্চলের রাস্তায় ভরদুপুরে থিকথিকে ভিড় দেখা গিয়েছে। মূলত, বাইরে থেকে আসা মানুষের ঢল আর টোটো বা গাড়িতে চেপে প্রতিমা দর্শনের প্রবণতায় দফায় দফায় অবরুদ্ধ হয়েছে চন্দননগর।
দিনকে টেক্কা দিয়ে রাতের পথে নেমেছিল জনতার বিপুল ঢল। রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় শনিবার রাতে চন্দননগরের পথে ছিল জনজোয়ার। সকালে বাইরে থেকে শহরে আসা মানুষ আলোর খেলা দেখতে থেকে গিয়েছেন। আবার, চন্দননগর, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুরের মানুষ রাতেই ভিড় জমিয়েছিলেন। ফলে, দ্বিমুখী চাপে হাঁসফাঁস করেছে চন্দননগর, ভদ্রেশ্বরের অলিগলি, রাজপথ। ভিড়ের দাপট দেখে অবশ্য হাসি চওড়া হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। অনেক পুজো উদ্যোক্তার দাবি, আজ রবিবার রেকর্ড ভিড় হবে। একদিকে নবমীর রাত অন্যদিকে ছুটির দিন। আবার পুজোর শেষদিন। তাই শহরের মণ্ডপে মণ্ডপে জনস্রোত নামবে। চন্দননগরের পুলিস কমিশনারেটের তরফেও সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ভিড়ের দাপটে নাজেহাল হতে হয়েছে পুলিস থেকে ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবকদের। চন্দননগরের উত্তরাঞ্চল সর্বজনীনের পুজো উদ্যোক্তা মোহিত নন্দী বলেন, আজ রবিবার তীব্র ভিড় আশা করছি। যদিও অষ্টমীর রাতে ভিড়ের বিপুল দাপট ছিল।
সবচেয়ে আশ্চর্য যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের পথেঘাটে ভিড়ের দাপট দেখা গিয়েছে। এদিন সকাল দশটাতেই বেলেঘাটা থেকে স্ত্রী ও মা’কে নিয়ে চন্দননগরে চলে এসেছিলেন সৌভিক মজুমদার। প্রায় ষাট পেরিয়ে যাওয়া মা’কে নিয়ে দিনভর পুজো দেখেছেন চন্দননগর থেকে ভদ্রেশ্বরে। রাতে বাগবাজার সর্বজনীনের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, রাতের চন্দননগর না কি অন্য চেহারায় হাজির হয়। সেটা চাক্ষুস করতে থেকে গিয়েছিলাম। বন্ধুদের সঙ্গে এসে দিনভর সব পুজো দেখেছেন যাদবপুরের সব্যসাচী পাল। চাউলপট্টির ‘আদি-মা’ থেকে তেঁতুলতলার সাবেক পুজোও দেখেছেন। লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারের পুজো মণ্ডপে দাঁড়িয়ে রাতে বলেন, চন্দননগরের আলোকসজ্জা না দেখে ফিরছি না। প্রয়োজনে রাত পর্যন্ত থাকব। নৈহাটি হয়ে কলকাতায় ফিরব।
সকালবেলাতে যে ভিড় হয়েছিল তা কিছুটা ফিকে হয়েছিল বিকেলে। তাও পথেঘাটে গাড়ি নিয়ে চলাচলের বিধিনিষেধে। আবার সন্ধ্যা গড়াতেই পথে নেমেছিলে ভিড়। যা সারারাত ঘুরেছে চন্দননগর থেকে মানকুণ্ডু হয়ে ভদ্রেশ্বরের আলোকমালায় সজ্জিত গলি থেকে রাজপথে।