অভিষেক চৌধুরী, কালনা: দুবছর আগে মেয়েকে টিউশন পড়তে নিয়ে যাওয়ার পথে বাইক দুর্ঘটনায় স্বামী জয়দেব হালদারকে হারাতে হয়। শুধু তাই নয়, সাত-আট মাস ধরে কঠিন লড়াই করে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন থাকা ছোট মেয়ে অঙ্গনা হালদার ওরফে পিউকে (১৮) নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে এনেছিলেন কালনার ধাত্রীগ্রাম দাসপাড়ার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মা রিঙ্কু হালদার দাস। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ওই মেয়ের পা থেকে প্লেট বের করতে হয়। মেয়েকে প্রাণে বাঁচাতে তার বাবার মৃত্যুর খবরও শোনানো হয়নি তাকে। তাই স্বামী মারা গেলেও মেয়ের কাছে সেই কথা গোপন রাখতে তাকে সুস্থ করে তুলতে একসময় শাঁখা-সিঁদুরও পড়তে হয় রিঙ্কুদেবীকে। কিন্তু হলে কী হবে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কালনা শহরের মধুবন এলাকায় প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়া শেষ করে সেখান থেকে বেরনোর পরেই ভাগ্যের এক নিষ্ঠুর পরিহাসে সেই মেয়েকেই অকালে হারাতে হল তাঁকে। শেষ ফোনে অঙ্গনা তার মা রিঙ্কুদেবীকে ফোনে আর্তনাদ করে ‘মা এরা আমাকে বাঁচতে দেবে না ’ বলে জানালেও আদরের ছোট মেয়েকে আর বাঁচাতে পারেননি তিনি। হন্যে হয়ে ওই রাতেই মেয়েকে খুঁজতে পুলিশের দ্বারস্থ হতেই বেশ কিছুক্ষণ পর কালনার জিউধারা রেলগেটের কিছুটা দূরে রেললাইনের ধার থেকে অঙ্গনার দেহ উদ্ধার করে কালনা জিআরপি থানার পুলিশ।