কী ভাবে চলে এই চক্র? পুলিশ জানায়, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করার পরে সেগুলি ব্যবহার করে ক্রিপ্টোকারেন্সির (বেসরকারি ডিজিটাল মুদ্রা) মাধ্যমে লেনদেন চালানো হয়। মোট লেনদেনের উপরে দুই শতাংশ কমিশন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করে চক্রের সঙ্গে যুক্ত লোকজন। কিন্তু লেনদেনের পরে কমিশন পাওয়া যায় না। আবার ক্রিপ্টোকারেন্সি বেচাকেনার মাধ্যমে মোটা টাকা আয়ের লোভ দেখিয়ে বহু মানুষকে বিনিয়োগ করতে বলা হয়। কিন্তু কারেন্সি ক্রেতাদের উল্টে আর্থিক ক্ষতি হয়। চার্জশিটে লেখা হয়েছে, চিন থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি আসার প্রমাণ মিলেছে তদন্তে।
গত জানুয়ারিতে দু’টি সংস্থার মালিক, দাসপুরের এক ব্যবসায়ী ব্যারাকপুর সাইবার পুলিশ থানায় লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, দক্ষিণ দমদমের ধীমান ভট্টাচার্য ও সুমিত বসাক নামে দু’জনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। পরে নিউটাউনে একটি হোটেলে তাঁদের মধ্যে চুক্তি হয়। পরে ধীমান হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে ওই ব্যবসায়ীকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলেন। অ্যাপটি ডাউনলোড করার এক ঘণ্টার মধ্যে ওই ব্যবসায়ীর দুই সংস্থার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এক কোটি টাকার লেনদেন হয়। কিন্তু তিনি চুক্তি মোতাবেক প্রাপ্য কমিশন পাননি। তার পরেই ধীমান ও সুমিত বেপাত্তা হয়ে যায়। পরে তাদের দুজনকে এবং সৌরভ কর নামে চক্রের আর এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কেন তিন অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রেখে বিচারপ্রক্রিয়া চালানো উচিত, তার সমর্থনে তদন্তকারী আধিকারিক জানান, অভিযুক্তেরা জামিন পেলে বেআইনি লেনদেন-পথের সন্ধান পেতে সমস্যা হবে। কারণ, অভিযুক্তেরা আন্তর্জাতিক ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। ভারতে প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে নিজেদের আড়ালে রাখাই ছিল এর উদ্দেশ্য। জামিন পেলে ধৃতেরা সাক্ষীদের ভয়ও দেখাতে পারে। মামলার সরকারি আইজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে মোটা টাকা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বহু মানুষকে প্রতারিত করেছে এরা। এত বড় চক্রের সন্ধান খুবকমই মেলে।’’