একাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা ছিল মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের (এমসিকিউ) উপরে। দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে ছোট উত্তরের প্রশ্ন (এসএকিউ) এবং বড় উত্তরের প্রশ্নের (এলএকিউ) উপরে। বাংলার শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, গল্প, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ এবং বাংলা শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির ইতিহাসে মোট নম্বর কত, তা দেওয়া আছে। কিন্তু তা থেকে কত নম্বরের এসএকিউ ও কত নম্বরের এলএকিউ আসবে, সেই বিভাজনের উল্লেখ নেই। বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির বাংলার শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘বড় প্রশ্ন আদৌ আসবে কিনা, ছোট প্রশ্ন এলে নম্বরের বিভাজন কী হবে, কিছুই স্পষ্ট নয়। পড়ুয়াদের কী ভাবে প্রস্তুত করব, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছি। এর দ্রুত নিষ্পত্তি দরকার।’’ শিক্ষকেরা জানান, একই অবস্থা ইংরেজির ক্ষেত্রেও।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্য বইয়ে নম্বরের বিভাজন না থাকলেও বাজারে আসা কিছু সহায়ক গ্রন্থে নম্বরের বিভাজন রয়েছে। কিন্তু তা কতটা ঠিক, সে নিয়েও রয়েছে সংশয়। যেমন, একটি সহায়ক বইয়ে লেখা আছে, কবিতা থেকে কোনও বড় প্রশ্ন আসবে না। ছোট প্রশ্ন আসবে। কিন্তু সেই তথ্য ঠিক কিনা, তা নিয়ে শিক্ষকেরা নিশ্চিত নন। কারণ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বিষয়ে কোনও আলোকপাত করেনি। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা পাঠ্য বইগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’
সেই সঙ্গে চিরঞ্জীব জানিয়েছেন, অনেক পড়ুয়া এবং শিক্ষক জানতে চাইছেন, ২০২৫-’২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ ও দ্বাদশে কেন কৃত্রিম মেধা ও ডেটা সায়েন্সকে আলাদা বিষয় হিসাবে না রেখে একটি বিষয় করা হচ্ছে? ২০২৪-’২৫ শিক্ষাবর্ষে এই দুই বিষয় যখন চালু হয়েছিল, তখন সেগুলি আলাদাই ছিল। চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘২০২৩ সালে কৃত্রিম মেধা যখন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে চালু হল, তখন সেটির পাঠ্যক্রম বেশ কঠিন ছিল। ২০২৪-’২৫ শিক্ষাবর্ষে সেই পাঠ্যক্রমকে কিছুটা সহজ করতে গিয়ে কয়েকটি অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছিল। তখন দেখা গেল, তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারে কৃত্রিম মেধা এবং ডেটা সায়েন্সের পাঠ্যক্রমের মধ্যে অনেক মিল। তাই আলাদা করে দু’টি বিষয় না রাখলেও চলে। সেই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, কৃত্রিম মেধার জনপ্রিয়তা ডেটা সায়েন্সের থেকে অনেকটাই বেশি। কারণ, এখন মোবাইল থেকে শুরু করে সর্বত্রই কৃত্রিম মেধার প্রয়োগ। উচ্চশিক্ষায় অনেকেই কৃত্রিম মেধা নিয়ে পড়তে চায়। তাই এ বার আর আলাদা করে দু’টি বিষয় না রেখে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স’ নামে একটি বিষয় করে দেওয়া হল।’’