প্রতিবছর শ্রদ্ধার সঙ্গে নন্দীগ্রাম শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলের নেতারা প্রতিবছরই শহিদ দিবস পালন করতে নন্দীগ্রামে আসেন। তবে এবছর রাজ্য নেতৃত্বের দেখা নেই। এলেন শুভেন্দু অধিকারী। শহিদ দিবস পালন নিয়ে বলেন, আমার সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে। ভোটের সঙ্গে নয়। ওঁরা ভোটের জন্য আসেন। এখন ভোট নেই তা আসছে না। আগামী বছর আবার আসবে।
রবিবার সকাল দশটা নাগাদ শুভেন্দু অধিকারী গোকুলনগর শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন। প্রায় পাঁচশোর বেশি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে এই মাল্যদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে শহিদদের উদ্দেশ্যে স্লোগান-সহ নন্দীগ্রামের কর্মী নেতৃত্বদের নিয়ে একটি মিছিল হয়। শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছলে মাল্যদান-স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন নন্দীগ্রামের করপল্লীর শহিদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শহিদদের শ্রদ্ধাঞ্জাপন করেন শুভেন্দু-সহ অন্যান্য নেতারা।
এদিকে, শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্য করেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের। তিনি বলেন, নন্দীগ্রামে ভূমিউচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির যখন আন্দোলন হয়েছিল তখন কোথাও শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা যায়নি।
তৃণমূলের ব্যানারে দুপুরে শহিদ দিবস পালন করল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। প্রতিবছর শাসকদলের রাজ্য নেতৃত্ব শ্রদ্ধা জানাতে নন্দীগ্রামে আসতেন। কিন্তু এবছর উপনির্বাচনের কারণে রাজ্য নেতৃত্বরা প্রচারে ব্যস্ত। তাছাড়া নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কাউকে সেভাবে ডাকা হয়নি। তাই কেউ আসেননি। জানালেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান।
ভোট এলেই তৃণমূল নেতাদের দেখা যায়। নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী সব সময় থাকেন। শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের পালটা জবাব দিতে ছাড়েননি তৃণমূল। জমি আন্দোলনের নেতা তথা তৃণমূল নেতা সেখ সুফিয়ান বলেন, " শুভেন্দুর কথার উত্তর দিতে ঘৃণা বোধ করি। জমি আন্দোলনের সময় ওর কোনো ভূমিকা ছিল না। ও মিথ্যাবাদি, এখানকার বাসিন্দা নয়। তাছাড়া এখন উপনির্বাচন চলছে। তাই রাজ্য নেতৃত্ব ব্যস্ত। আমারা কাউকে ডাকিনি। নন্দীগ্রামের মানুষ ও শহিদ পরিবার আমাদের পাশেই আছে। আন্দোলনের সময় বিজেপির কোনো ভূমিকাই ছিল না। শুভেন্দু যতই বলুক শহিদ পরিবার আমাদের সঙ্গেই আছে।
এদিন শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মহিষাদলের বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী, তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অসিত ব্যানার্জি, চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতি, নন্দীগ্রাম ব্লক-১ এর তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ সহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রাম পুনর্দখলের জন্য ‘অপারেশান সূর্যোদয়’ নামে অভিযান চালায় সিপিএম। সেদিন বেলার দিকে একই সঙ্গে তেখালি ব্রিজ হয়ে গোকুলনগর, মহেশপুর দখল করে সিপিএমের বাহিনী। আর একটি দল সাতেঙ্গাবাড়ি, রানিচক হয়ে একের পর এক গ্রাম দখল করে। সেদিনের অভিযানে মহেশপুরে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির একটি মিছিলে সিপিএম বাহিনী হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে খেজুরিতে তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি। সেদিন থেকেই আদিত্য বেরা সহ ১০ জন নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর থেকেই এই দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)