পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে বচসা এবং মারধরের অভিযোগ তুলেছিলেন অর্ণব চক্রবর্তী নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক বাসিন্দা। এই নিয়ে হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হন তিনি। অর্ণব এক জন পশুপ্রেমী। পথকুকুর ও বিড়ালদের নিয়মিত খাওয়ান। দু’পক্ষের ঝামেলা হয়েছিল গত ১ অগস্ট। ওই দিন মামলাকারী পথকুকুরদের খাওয়ানোর সময় অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে বচসা শুরু হয়েছিল। কেন ওই এলাকায় খাওয়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে দু’পক্ষের তর্কাতর্কি হয়। পরে মামলাকারীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, থানায় অভিযোগ জানালে আরও একপ্রস্ত ঝামেলা হয়। মামলাকারীর উপর অভিযুক্ত কোদাল দিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হলে পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে সামাজিক সমস্যার বিষয়টি সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করে আদালত। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, এই সমস্যা কাটাতে পদক্ষেপ করুক রাজ্য। পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে বচসা ও অপরাধ ঠেকাতে সব পুরসভাকে এগিয়ে আসার কথাও বলেছেন বিচারপতি। আদালত চাইছে, সাধারণ মানুষেরা পথকুকুরদের খাওয়ান, কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায়। পথকুকুরদের খাওয়ানোর জায়গা নির্দিষ্ট করে দিক পুরসভা। সেই চিহ্নিত জায়গাগুলিতে প্রতিদিন খাবার দিয়ে আসতে পারবেন সাধারণ নাগরিকেরা।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে সামাজিক সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন প্রতিবেশীরা। এই সমস্যা কাটাতে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ চাইছে রাজ্য।
পথকুকুরদের খাওয়ানো সংক্রান্ত বিষয়ে অতীতেও বিভিন্ন হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। কখনও দিল্লি হাই কোর্টে। কখনও বম্বে হাই কোর্টে। সমাজে দু’ধরনের মানুষই আছেন। এক শ্রেণির মানুষ রয়েছেন, যাঁরা কুকুরপ্রেমী। অপর শ্রেণির মানুষ, যাঁরা কুকুরে ভয় পান। চলতি বছরেরই অগস্টে বম্বে হাই কোর্ট পথকুকুরদের খাওয়ানো সংক্রান্ত বিবাদ মেটাতে বৃহন্মুম্বই নগরপালিকাকে (মুম্বই পুরসভা) একটি পশুকল্যাণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। আবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, দিল্লি হাই কোর্ট চলতি বছরের মার্চে মন্তব্য করেছিল, সাধারণ মানুষ পথকুকুরদের খাওয়ানোর কারণে ওই কুকুরগুলি নিজেদের অঞ্চল রক্ষা করতে বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে।