দু’বছরেই সাফল্য, ঢেউয়ের তাণ্ডব ম্যানগ্রোভে বাধা পেয়ে রক্ষা বাঁধের
বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: সুন্দরবনের বিভিন্ন অঞ্চলে নদীবাঁধের ভাঙন এখনও অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু নামখানার হরিপুর ঘোষখালের নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা খুঁজে পেয়েছেন নতুন দিশা। আশঙ্কা কমেছে। অথচ একসময় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রায়ই নোনা জলে প্লাবিত হয়ে যেত গোটা এলাকা। সেই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে, ২২ বছর আগে এই এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার কংক্রিটের নদীবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বাঁধ নির্মাণ হওয়ার পরেও নদীর প্লাবন থেকে গ্রামবাসীরা রক্ষা পাননি। একসময় এই বাঁধেরও বেশ কিছুটা অংশ সপ্তমুখী নদীর ঢেউয়ের তাণ্ডবে ভেঙে গিয়েছিল। পরে সেই ভগ্ন নদীবাঁধ আবারও মেরামত করা হয়েছিল। মূলত নদীর ঢেউ এই বাঁধে সরাসরি ধাক্কা দিত। সেই কারণেই টিকত না বাঁধ। তবে নদীর তাণ্ডব আটকে দিয়েছে ম্যানগ্রোভ। ঢেউয়ের প্রভাবে বাঁধের আর তেমন কোনও ক্ষতি হয় না।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দু’বছর আগে কংক্রিটের নদীবাঁধের সামনের চরে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছিল। প্রায় ২০ মিটার চওড়া করে ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে ছোট ছোট ম্যানগ্রোভের চারা বসানো হয়েছিল। সেই ম্যানগ্রোভ এখন বড় হয়ে গিয়েছে। আর তাই নদীর ঢেউ আর সরাসরি বাঁধে ধাক্কা মারতে পারে না। সামনে ম্যানগ্রোভ গুলি থাকার কারণে নদীর ঢেউয়ের তাণ্ডব এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। ফলে নদীবাঁধের আর তেমন কোনও ক্ষতি হয় না। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীরাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তাঁরা এখন নতুন করে বেঁচে থাকার দিশা খুঁজে পেয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা অর্জুন গিরি বলেন, ‘ম্যানগ্রোভগুলিতে ধাক্কা খাওয়ার পর নদীর ঢেউ আর সজোরে বাঁধের উপর আছড়ে পড়তে পারে না। এখন আশা করা যায়, এই বাঁধ দীর্ঘদিন স্থায়িত্ব হবে। এলাকাবাসীরাও সেই ভরসায় বেঁচে থাকার নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন। বর্তমান এই এলাকায় নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠছে।’