• শিয়ালদহে অস্ত্র উদ্ধার: শহরে অস্ত্র আনার নেপথ্যে কি শুধুই ‘হাতবদল’? উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা
    আনন্দবাজার | ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • ‘হাতবদলে’র উদ্দেশ্যেই কি আনা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ অস্ত্র? নাকি পিছনে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল? শিয়ালদহ অস্ত্র উদ্ধারের তদন্তে আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র বিহারের মুঙ্গের থেকে আনা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তবে খাস কলকাতায় শিয়ালদহের মতো জনবহুল এলাকায় এ ভাবে অস্ত্র এবং কার্তুজ-সহ গ্রেফতারির ঘটনায় নিরাপত্তার পাশাপাশি পুলিশি নজরদারি নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।

    শনিবার রাতে শিয়ালদহ সংলগ্ন বৈঠকখানা বাজার থেকে এক জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ধৃতের নাম মহম্মদ ইজ়রায়েল খান। তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে দু’টি সেভেন এমএম পিস্তল, তিনটি ওয়ান শটার বন্দুক এবং ৯০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতকে রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ২০ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

    স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার ব্যাগ নিয়ে কিছু সময় ধরে বৈঠকখানা বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকা সাদা পোশাকের কয়েক জন পুলিশ তাঁকে ঘিরে ধরে। হাতে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় অস্ত্র এবং কার্তুজ। কিন্তু কী উদ্দেশ্যে এই অস্ত্র আনা হয়েছিল? তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মুঙ্গের থেকে আনা হয়েছিল এই অস্ত্র। শিয়ালদহ সংলগ্ন এলাকায় হাতবদল করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তবে হাতবদল করে এই অস্ত্রগুলিকে শহরতলি নাকি শহরের অন্য কোথাও পাঠানোর ছক ছিল— তা নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা মনে করছেন, শিয়ালদহের সঙ্গে শহরতলির যোগাযোগের বড় মাধ্যম ট্রেন। তাই কারবারিরা ট্রেনকে ব্যবহার করার জন্য শিয়ালদহ সংলগ্ন এলাকাকে হাতবদলের জন্য বেছে নিয়েছিলেন কিনা— তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শহরের কোনও কারবারির সেখানে আসার কথা ছিল কিনা, সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অস্ত্রগুলি বিক্রির কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    লালবাজার সূত্রের খবর, ধৃত ইজ়রায়েল আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তবে শিয়ালদহ সংলগ্ন রাজাবাগান এলাকায় ভাড়া থাকত। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। ২০১৪ সালে সিঁথি থানায় একটি ডাকাতির মামলায় তাঁকে ধরা হয়েছিল। লালবাজারের এক তদন্তকারী কর্তা বলেন, ‘‘কী উদ্দেশ্যে এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আনা হয়েছিল, তা দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এই চক্রে আরও কয়েক জন যুক্ত থাকতে পারে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)