মনোরঞ্জন মিশ্র: এ যেন আজব গ্রাম। ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে বঞ্চিত গোটা গ্রামের মানুষ। ডিজিটাল মাধ্যমের যুগে তাই পিছিয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। পুরুলিয়া শহর থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে রয়েছে পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত দুবরাজপুর গ্রামটি। প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস এই গ্রামে। আজব বিষয় হল, গ্রামে ঢুকলে মোবাইলের কোনো নেটওয়ার্কই সেখানে কাজ করে না । আবাস যোজনার সার্ভে হোক কিংবা অন্যান্য কোনো সরকারি বেসরকারি সার্ভের কাজ, কোনও নেটওয়ার্ক না কাজ করায় হিমসিম খেতে আধিকারিকদের।
গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন মাধ্যম প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে। ফোন করতে হলে গ্রামবাসীদের কখনও গ্রামের বাইরে ছুটতে হয়। কখনও গাছে চেপে ফোন করতে হয় বা কারও দোতলা বাড়ির উপর চেপে ফোন করতে হয়। নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত কোনো কাজ করতে হলে মোবাইলকে বাঁশের ডগায় বেঁধে উপরে তুলে দেওয়া হয় বা গাছের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে হটস্পট ব্যবহার করে বিকল্প মোবাইল থেকে ওয়াইফাই নিয়ে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়।
নেটওয়ার্কের গোলমালে একদিকে যেমন অনলাইন মাধ্যমে পড়াশোনা করতে পারেন না গ্রামের পড়ুয়ারা। আবার গ্রামের কারোও শরীর অসুস্থ হলে, কিম্বা যে কোনো দরকারি সময়ে নেটওয়ার্ক না থাকায় মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেন না গ্রামবাসীরা। ছুটতে হয় গ্রামের বাইরে।
এখানেই সমস্যার শেষ নেই । গ্রামের বাইরে থেকে অন্য কেউ গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগযোগ করতে পারেন না। পাশের গ্রামের বাসিন্দাদের ফোন করে সেই বার্তা দেওয়া হয়, এবার সেই গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে এসে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেই বার্তা পৌঁছে দেয়।
বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, ওই গ্রাম শ্যাডো জোনের মধ্যে পড়ে । তাই সেখানে কোনো নেটওয়ার্ক সেখানে কাজ করে না। আবাস যোজনার সার্ভের সময় জট হয়ে দাঁড়িয়েছিল নেটওয়ার্ক পরিষেবা। বাঁশের উপর মোবাইল ঝুলিয়ে হটস্পট নিয়ে কোনক্রমে সেই কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে এই সমস্যা থেকে নিস্তার কবে পাবেন গ্রামবাসীরা ? উত্তর জানা নেই কারও কাছেই।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)