একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব কিনতে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে পড়ুয়াপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই টাকা অ্যাকাউন্টে পড়া নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক। শুরুটা হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সেখানে বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার পর বেশ কয়েকটি জেলা থেকে একই অভিযোগ উঠে আসে। রাজ্য সরকারের ‘তরুণের প্রকল্প’-এর উপভোক্তাদের জন্য পাঠানো টাকা কী ভাবে অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই সোমবার বিকেলে বিশেষ বৈঠক হয় নবান্নে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা।
তথ্য বলছে, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুর— এই ছ’টি জেলা থেকে ট্যাবের টাকা গায়েবের অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে ৩০৯ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। নবান্নের বৈঠকে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, সোমবার ৯৫ জন পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরাও জলদি টাকা পেয়ে যাবেন। যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে ‘ভুলে’ টাকা চলে গিয়েছিল, সেই অ্যাকাউন্টগুলি ‘সিজ়’ করা হয়েছে। শিক্ষা দফতরের একটি সূত্রের খবর, এমন ৩০০-র বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছে প্রশাসন, যেগুলোয় ভুলবশত টাকা চলে গিয়েছিল।
নবান্ন সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে রাজ্য সরকারের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে প্রধানশিক্ষকদেরই গাফিলতি ধরা পড়েছে। বিষয়টিতে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব বিনোদ কুমারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজির উদ্দেশে মুখ্যসচিব বলেছেন, অ্যাকাউন্ট গোলোযোগে অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করতে। পাশাপাশি মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, আগামী দিনে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য ‘সিস্টেম’কে আরও উন্নত করতে হবে। প্রায় ৪০ মিনিটের ওই বৈঠকে ট্যাবের টাকা গায়েবের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন পন্থ। তিনি জানান, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে জন্য আধার সংযুক্ত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।