আরজি কর-কাণ্ডের ৫৮ দিনের মাথায় শিয়ালদহ আদালতে প্রথম চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেই চার্জশিটে ‘মূল অভিযুক্ত’ হিসাবে শুধুমাত্র ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারেরই নাম রয়েছে। সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতে চার্জ গঠন হয়। তার এক সপ্তাহ পর, সোমবার ‘ইন ক্যামেরা’ বিচার শুরু হল শিয়ালদহ আদালতে। শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব। তবে জুনিয়র ডাক্তারেরা এখনই আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসতে রাজি নন। তাঁদের কথায়, ‘‘যত দিন না পর্যন্ত ন্যায়বিচার মিলছে, আন্দোলন যেমন চলছে, তেমনই চলবে।’’
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য বলেন, ‘‘বিচারটা খুবই বড় বিষয়। আমাদের দাবি ন্যায়বিচারের। ট্রায়াল শুরু হয়েছে, তবে বিচার এখনও শেষ হয়নি।’’ একই দাবি শোনা গেল আর এক আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার ঊর্মিমালা ভট্টাচার্যের গলাতেও। তিনি এ-ও জানান, তাঁরা পুরো চার্জশিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। আদালতের নির্দেশেই কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যায়। তবে সেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে ‘অসন্তোষপ্রকাশ’ করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পুলস্ত্যর কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের উপরও আমরা এই মুহূর্তে পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছি না।’’
৯ অগস্টের পর থেকে তিন মাসের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ঘটেছে অনেক কিছু। জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁদের আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়িয়েছেন। পথে নেমে বিক্ষোভ-ধর্নার পাশাপাশি কর্মবিরতি, ‘আমরণ অনশন’ও করেছেন জুনিয়র তাঁরা। দফায় দফায় সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। একাধিক দাবিতে সরব হন তাঁরা। তার মধ্যে কিছু সরকার মেনেছে, কয়েকটি মানেওনি। তবে দাবিদাওয়ার তালিকায় প্রথমেই ছিল ‘নির্যাতিতার জন্য বিচার’।
ঘটনার তিন মাস পরেও ‘বিচারের দাবি’তে পথে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। গত শনিবার তিন মাস পার হওয়ার দিনে আন্দোলনকারীদের কণ্ঠে ছিল শুধুই ‘আক্ষেপ’। প্রশ্ন ছিল একটাই ‘বিচার কোথায়?’ সে দিনের একাধিক কর্মসূচি থেকে আওয়াজ তোলা হয়েছিল, ‘দ্রুত বিচারে’র। সোমবার আরজি কর-কাণ্ডের বিচার শুরু হলেও জুনিয়র ডাক্তারেরা মনে করছেন, তাঁদের দাবি মেটেনি। পুলস্ত্য বলেন, ‘‘আন্দোলন যেমন চলছে চলবে।’’ আর ঊর্মিমালার কথায়, ‘‘আমরা পুরো চার্জশিটের অপেক্ষায় আছি। আরও লোকজনের ধরা পড়া বাকি।’’