• রাসে সন্ন্যাসিনীর বেশে চণ্ডীমাতা পুজোর অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: মুখে হাসি, চোখে রাগ। পরনে লাল পাড় ঘিয়ে রঙের গরদের শাড়ি। মাথার চুলে রুদ্রাক্ষের মালা জড়ানো। দেবীর গলায়, ১০ হাতে ও কানে রুদ্রাক্ষের মালা। নবদ্বীপের রেজিস্ট্রি অফিস মোড়ের শ্রীশ্রী চণ্ডীমাতার রূপ এমনই। রাস উৎসবে শ্রীমন্দির ক্লাবের এই পুজো ১১০ বছরের প্রাচীন। এই পুজোর সঙ্গে এলাকার মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। এই প্রতিমার উচ্চতা ২৩ ফুট। চওড়ায় সাড়ে ১৩ ফুট। বাহন সিংহের উপরে দেবীর অধিষ্ঠান। পদতলে থাকে মহিষ। দেবীর ১০হাতে থাকে ত্রিশূল, খড়্গ, টাঙ্গি, ঢাল, শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম ও কমণ্ডলু। ত্রিশূল দিয়ে দেবী অসুরকে বধ করছেন। 


    এখানে দেবী সন্ন্যাসিনীর বেশে রয়েছেন। তাই এই দেবীকে কোনও সোনার অলঙ্কার পরানো হয় না। তবে দেবীর ১০ হাতে যে সমস্ত অস্ত্র থাকে, তার সবই রুপোর তৈরি। অসুরের খড়্গ ও ঢালও রুপোর।


    রাসপুজোর সকালে প্রথা মেনে চণ্ডীমণ্ডপে প্রথমে নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী বুড়োশিব ও যোগনাথ শিবের পুজো হয়। তারপর দেবী চণ্ডীর পুজো শুরু হয়। দুপুরে দেবীকে ভোগ হিসেবে খিচুড়ি, মালপোয়া, বিভিন্ন ভাজা, পঞ্চব্যঞ্জন ও পরমান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। পরে সেই প্রসাদ পথচারী ও পড়শিদের মধ্যে বিলি করা হয়। শ্রীমন্দির ক্লাবের চণ্ডীমাতা বারোয়ারি কমিটির মূল উদ্যোক্তা সন্তোষ মল্লিক বলেন, একসময় দেবীর কাছে ছাগবলির প্রথা ছিল। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে দেবীর উদ্দেশে চালকুমড়ো, আখ ও কলা বলি দেওয়া হয়। প্রতিমার মাথায় থাকে রুপোর চাঁদ। আমি ২৫বছর ধরে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত।


    সন্তোষবাবু জানালেন, প্রতি বছর পুজোর দিন অনেকে উপবাস থেকে দেবী চণ্ডীর কাছে অঞ্জলি দেন। পুজোর জন্য স্থানীয়রা সাধ্যমতো চাঁদা দেন। এখানে একটি মন্দির আছে। সেখানে বছরভর দেবী চণ্ডীর নিত্যপুজো হয়।


    পুজোর আগের দিন কমিটির তরফে এলাকার বাড়ি বাড়ি প্রসাদের কুপন পৌঁছে দেওয়া হয়। পুজো শেষে সেই কুপন দেখিয়ে মণ্ডপ থেকে প্রসাদ নিয়ে যান ভক্তরা। ১৫ নভেম্বর শুক্রবার রাসপুজো। শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিমা শোভাযাত্রা বা আড়ং বের হবে। আলোকসজ্জায় সাজিয়ে, বাদ্যযন্ত্র সহ, লোহার বল বিয়ারিং লাগানো গাড়িতে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমাবেন। পরদিন পীরতলা খালে দেবী চণ্ডীর নিরঞ্জন হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)