সংবাদদাতা, কালনা: ভিনরাজ্য থেকে আসা ইটভাটার হিন্দিভাষী শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষার অঙ্গনে এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি পূর্বস্থলী-১ ব্লকের জাহান্নগরের একটি ইটভাটায় হিন্দিভাষী শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে চলেছেন। সাধ্যমতো শিশুদের হাতে তুলে দেন বই, খাতা, স্লেট সহ শিক্ষার নানা সামগ্রী। সহযোগিতায় পাশে পেয়েছেন ভাটা মালিককে।
কালনা মহকুমাজুড়ে রয়েছে একাধিক ইটভাটা। এইসব ইটভাটাগুলির অধিকাংশ শ্রমিক বিহার ও ঝাড়খণ্ডের। এক দশক আগে স্বপন দেবনাথ উপলব্ধি করেন, টানা ৬-৭ মাস ভিনরাজ্যে থাকার ফলে শ্রমিকদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এরপরই তিনি জাহান্নগরের একটি ইটভাটায় পরিযায়ী শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষাদানে উদ্যোগী হন। নিজের উদ্যোগে দুই শিক্ষিকাকে দিয়ে শ্রমিক সন্তানদের ভাটা চত্বরেই শিক্ষাদান শুরু করেন। সাধ্যমতো বই, খাতা, স্লেট দেন। সাধারণত নভেম্বর থেকে ভাটাগুলিতে ইট তৈরি শুরু হয়। এবারও জাহান্নগর ইটভাটায় এসে গিয়েছেন শ্রমিকরা। স্বপনবাবুও স্কুল খুলে ফেলেছেন। এবার পড়ুয়ার সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। সকাল ৭টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত চলে স্কুল। খুশি শ্রমিকরা।
ভাটা মালিক অসীমকুমার মিত্র বলেন, স্বপনবাবুর উদ্যোগে দশ বছর আগে শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষাদান শুরু হয়। মাঝে মাঝেই তিনি হাজির হয়ে খোঁজখবর নেন। শিক্ষার সামগ্রী সহ পোশাক বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন। তাঁর জন্যই ছোটছোট ছেলেমেয়েরা শিক্ষা পাচ্ছে। দুই শিক্ষিকা মিঠু মজুমদার ও রাধারানি দেবনাথ বলেন, বাচ্চাদের মধ্যে শিক্ষার আগ্রহ রয়েছে। প্রথম যখন স্কুল শুরু হয় তখন অনেক ছেলেমেয়েরা বই খাতা কী জিনিস জানতই না। আর সিজন শেষে অনেকেই রীতিমতো হিন্দি অক্ষর লিখতে ও পড়তে শিখে যায়। শিক্ষার আগ্রহ বাড়ে।
স্বপনবাবু বলেন, ইটভাটার শ্রমিক সন্তানরা বাবা-মায়ের সঙ্গে এসে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। আমি লক্ষ্য করেছি স্থানীয় বাংলা স্কুলে শিক্ষার ব্যবস্থা করলে বাচ্চাদের মধ্যে তেমন আগ্রহ থাকে না। তাই ভাটা চত্বরেই হিন্দি মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। -নিজস্ব চিত্র