নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: সাতদিনের মধ্যে একই পাড়ার ৬টি বাড়িতে চোরের হানা। ধানতলা থানার আড়ংঘাটার মাঠপাড়া গ্রামের ওই ছ’টি বাড়িতে চাবি দিয়ে আলমারি খুলে গয়না থেকে নগদ টাকা— হাতিয়ে চম্পট দেয় তারা। ওই ছ’টি পরিবারের মধ্যে কারও বাড়িতে মেয়ের বিয়ে ছিল, তো কেউ চাষের মাল বিক্রি করে তুলেছিলেন গোটা বছরের টাকা। ফলে মাথায় হাত সকলের। চোরের ভয়ে কাঁপছে গোটা গ্রাম। ধানতলা থানা তদন্ত শুরু করলেও, এখনও ফল মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের মহানন্দ বিশ্বাস এবং বাবুরাম রায়ের বাড়িতে রবিবার রাতে হানা দিয়ে সর্বস্ব নিয়ে চম্পট দেয় চোরেরা। এরমধ্যে মহানন্দবাবুর বাড়িতেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি সোনার গয়না এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিল। বাড়ির ছেলে উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, আমার দিদির বাদকুল্লার বাড়ি সংস্কার হচ্ছে। তাই ওদের সমস্ত গয়না আমাদের বাড়িতেই ছিল। এছাড়াও আমাদের বেশ কিছু সোনাদানা আলমারিতেই থাকত। সব লুট হয়ে গিয়েছে। মহানন্দ বিশ্বাসের বাড়ির ছাদের দরজার কব্জা দুর্বল ছিল। সেখান থেকেই গোটা দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর সিঁড়ি দিয়ে নেমে সোজা ঘরে ঢুকে যায় চোর। চাবি খুঁজে আলমারি খুলে সর্বস্ব লুট করে তারা। বাড়িতে লোকজন থাকলেও, তারা এতকাণ্ডের কিছুই টের পাননি। তাহলে কি চুরির আগে ক্লোরোফর্ম জাতীয় কিছু ব্যবহার করা হয়েছিল, উঠছে প্রশ্ন। কারণ একইভাবে চুরি হয়েছে অনতিদূরের বাবুরাম রায়ের বাড়িতেও। কয়েক মাস বাদেই তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ে। অল্প অল্প করে সোনার গয়না বানাচ্ছিলেন তিনি। বাড়িতে প্রায় দুই লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের গয়না ছিল। এছাড়াও চাষের মাল বিক্রির নগদ এক লক্ষ টাকা ছিল। তাঁর বাড়িতে সরাসরি মূল গেটের তালা ভেঙেই ভিতরে চলে আসে এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। রাতের অন্ধকারেই একই পদ্ধতিতে আলমারির চাবি খুলে লুট করে নেয় সব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ওই এলাকারই আরও চারটি বাড়িতে পরপর চুরি হয়েছে। এছাড়াও একটি দোকান থেকেও লুটপাট চালানো হয়েছে। ঠিক একই পদ্ধতিতে, বাড়ির তালা খুলে অথবা ভেঙে, তারপর আলমারি খুলে গয়না এবং টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই বাড়িতে লোক ছিল। অথচ কেউ টের পাননি। ফলে এহেন ‹নিখুঁত› চুরি করতে সক্ষম চোরদের নিয়েও চিন্তায় পুলিস। ইতিমধ্যেই চুরির ঘটনাগুলি নিয়ে নিকটবর্তী আড়ংঘাটা ফাঁড়ি এবং ধানতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিস তদন্তও শুরু করেছে। যদিও এখনও তদন্তে অগ্রগতি নজরে আসেনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে, মাঠপাড়া তো বটেই, আড়ংঘাটাজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ। চুরি করে ঘরের সবকিছু লণ্ডভণ্ড করেছে দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র