• মানিকচকে আবাসের তালিকায় অযোগ্যদের নাম, উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: খড় দিয়ে বাঁধানো ঘরের দেওয়াল। উপরে টিনের ছাউনি। কারও আবার মাটির বাড়ি। এমন দুঃস্থ পরিবারগুলির নাম নেই আবাসের তালিকায়। অভিযোগ, যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, আবাসের তালিকায় তাঁদের নাম। এমনকী, ব্যবসায়ী, আইসিডিএস কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারের নামও রয়েছে ঘর পাওয়ার তালিকায়। ভূতনির দক্ষিণ চণ্ডীপুরে আবাস যোজনার তালিকা ঘিরে বিস্তর অভিযোগ তুলে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। এদিন এলাকায় বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।


    তাঁদের বক্তব্য, আবাসের তালিকা থেকে বঞ্চিত দক্ষিণ চণ্ডীপুরের ১০৭ নম্বর বুথের বাসিন্দারা। গ্রামের একজনেরও নাম ওঠেনি আবাসের তালিকায়। হতাশ গ্রামবাসীরা এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন।  


    দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শক্তি মণ্ডলের বক্তব্য, বিগত দিনে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমীক্ষা হয়েছিল। সমীক্ষায় পঞ্চায়েতের কাউকে যুক্ত করা হয়নি। ওই বাসিন্দাদের নাম রয়েছে কি না সে বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে এবছরের বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের তালিকা ব্লক প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। মানিকচক ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, গ্রামবাসীদের অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


    ভূতনির দক্ষিণ চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রাম নিয়ে ১০৭ নম্বর বুথ। প্রায় চারশো পরিবারের বসবাস সেখানে। এক ও দুই নম্বর কলোনি এবং ভুবনটোলা গ্রাম এই বুথের অন্তর্গত। আবাসের তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা যায়, এক নম্বর কলোনি এবং ভুবনটোলা গ্রামের কয়েকজনের নাম থাকলেও দুই নম্বর কলোনির বাসিন্দাদের নাম নেই। এবছরের বন্যা পরিস্থিতিতে গোটা গ্রাম জলমগ্ন হয়েছিল। ভেঙেছে বহু বাড়িঘর। ঘরছাড়া হয়েছিল বহু পরিবার। 


    যদিও সেই দুর্যোগের দিন কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু আবাসের তালিকায় দুই নম্বর কলোনির কোনও পরিবারের নাম না থাকায় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। যদিও প্রধান জানিয়েছেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্লক প্রশাসনে জানানো হয়েছে। 


    এলাকাবাসীর দাবি, গ্রামে প্রায় ২০০ পরিবার রয়েছে। তাঁরা কেউ কি বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন? অথচ পাশের দুই গ্রামে এমন অনেকের নাম আবাসের  তালিকায় রয়েছে, যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে। তালিকায় থাকা অনেকে আবার চাকরিজীবীও। 


    স্থানীয় বধূ পম্পা সরকার বলেন, বন্যায় বাড়িঘর ভেসে গিয়েছে। কোনও রকমে বেঁচে আছি। এরকম অনেকে আছেন। অথচ আমাদের গ্রামে কোনও সার্ভে হয়নি। কেউ কোনও খোঁজও নিতে আসেনি। 


    আরেক বাসিন্দা হিমাচল সরকারের অভিযোগ, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং  সমীক্ষকদের গাফিলতির কারণে আমরা বঞ্চিত। এমনকী এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকেও সমীক্ষার ব্যাপারে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। পম্পা, হিমাচলরা বলেন, আমরা ব্লক প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। যোগ্যরা যাতে ঘর পায়, প্রশাসন বিষয়টি দেখুক।  আবাস যোজনায় নাম না থাকায় ভূতনির দক্ষিণ চণ্ডীপুর ২ নম্বর কলোনির গ্রামে বিক্ষোভ।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)