• সিতাইয়ে ঝড় তুললেন পাঠান
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার ও দিনহাটা: কাল, বুধবার রাজ্যের ৬ কেন্দ্রে উপ নির্বাচন। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গের সিতাই ও মাদারিহাট বিধানসভা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সোমবার ছিল শেষ লগ্নের প্রচার। কার্যত টি-২০ ম্যাচের মেজাজেই এদিন দুই বিধানসভাতে ঝড় তোলেন বহরমপুরের তৃণমূল কংগ্রেস এমপি প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। 


    দুপুরে মাদারিহাটের রাঙালিবাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিশুবাড়ি থেকে দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পোকে নিয়ে প্রচার শুরু করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার এমপি প্রকাশচিক বরাইক। প্রচারে বের হওয়ার আগে শিশুবাড়ি কালীমন্দিরে আসেন তিনি। এরপর হুডখোলা জিপে শুরু হয় রোডশো। 


    ততক্ষণে শিশুবাড়ি বাজারের অলিগলিতে জনজোয়ার। তাঁর দিকে কাগজ-কলম এগিয়ে দেন গুণগ্রাহীরা। জিপ থেকেই অটোগ্রাফ দেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। 


    রাঙালিবাজনার দলদলি ও এমএলএ’র হাট ছুঁয়ে ইউসুফ পাঠানের রোডশো ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে ধরে এগতে থাকে খয়েরবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের দিকে। মোহন সিং হাইস্কুল, খয়েরবাড়ি, ইসলামাবাদ হয়ে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে গিয়ে শেষ হয় রোডশো। এর আগে ইউসুফ রবিবার মাদারিহাট বিধানসভার বিন্নাগুড়ি, গয়েরকাটা, বীরপাড়ায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনেও রোডশো করেন। কিন্তু রবিবারের পদযাত্রার ভিড় এদিন ছাপিয়ে যায়। প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার এদিন মাদারিহাটে কোথাও পথসভা করেননি। হুডখোলা গাড়িতে রোডশোর সময় হাতজোড় করে মাদারিহাটের উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পোকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানান। 


    সিতাইতেও পাঠানকে ঘিরে জনতার উন্মাদনা তুঙ্গে পৌঁছয়। আঁটিয়াবাড়ির রাধানগর কলোনিতে ফুল দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয়। 


    রাজনীতিতে যোগ দিয়েই ‘জায়েন্ট কিলার’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন ইউসুফ পাঠান। এদিন সিতাইতে প্রচারে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোচবিহারের এমপি জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। সঙ্গে হুডখোলা গাড়িতে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়। ভারত-বাংলাদেশের শেষসীমান্ত গীতালদহে আসতেই পাঠানকে দেখতে রাস্তার দু’ধারে হাজির হন শতশত মানুষ। 


    তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে চলতে থাকে প্রচার। সেখানেই বার্তা দেওয়া হয়— ইউসুফ পাঠান এসেছেন, আপনার এলাকায়। সেই বার্তা শুনে ঘর ছেড়ে রাস্তায় চলে আসেন এলাকার মানুষ। কেউ তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার আবদার নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন গাড়ির সামনে। কেউ আবার হাত মেলাতে এগিয়ে আসেন সামনে। খেতের উপর দিয়ে দৌড়ে আসতে দেখা যায় বাড়ির সাধারণ মহিলাদেরকেও। 


    গ্রাম বাংলার সোনালি ধান খেত মনে ধরে পাঠানের। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ানোর ফাঁকে ধান খেতের ছবি তোলেন মোবাইলে। কখনও আবার অনুরোধ রাখতে ব্যাটের উপর লিখে দেন নিজের নাম। ফেরার পথে ওকড়াবাড়ি বাজারে চায়ের আড্ডায় যোগ দেন। সঙ্গীতা রায় ও এমপি’কে নিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেন পাঠান। সেখানেও তাঁকে দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। রাস্তার ধারে শুধু মানুষের কালো মাথা দেখে খুশি ইউসুফ পাঠানও। তিনি বলেন, মানুষের এই বিপুল উপস্থিতিই ইঙ্গিত দিচ্ছে রেকর্ড হবে সিতাইতে। তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায় বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)