সংবাদদাতা, দিনহাটা: বুধবার সিতাইয়ে উপ নির্বাচন। তারআগে বুথে বুথে নির্বাচনী এজেন্ট দিতেই হিমশিম অবস্থা বিজেপির। এই বিধানসভায় ৩০০টি বুথ রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে ২৪০টি বুথে এজেন্ট দিয়েছিল বিজেপি। তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংগঠন দুর্বল থাকায় ৬০টি বুথে সেই সময় এজেন্ট দিতে পারেনি পদ্ম শিবির।
উপ নির্বাচনে অবস্থা যে আরও শোচনীয় হবে তা আগেই আঁচ করেছিলেন বিজেপি নেতারা। অনেক জায়গায় আবার বুথ কমিটিও নেই। এবার ৮০টি বুথেও এজেন্ট দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিজেপির অন্দরে। সোমবার শেষ প্রচারের পর এলাকা ছাড়বেন বহিরাগত নেতারা।
তারপর নিজের বুথ সামলাতে হবে স্থানীয় কর্মীদের। সেখানেই হালে পানি পাচ্ছে না নেতা-কর্মীরা। বিজেপি সূত্রে খবর, ১০০ শতাংশ বুথে এজেন্ট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছিল শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই অনুযায়ী তালিকাও তৈরি হয়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে এজেন্ট খোঁজা শুরু হয়। প্রথমে অনেক এগিয়ে এলেও ভোট কাছে আসতেই আর তাঁরা রাজি হচ্ছেন না।
এবার সিতাইয়ে বিজেপি সেই অর্থে প্রচারও করতে পারেনি। মাদারিহাটে দলের রাজ্য সভাপতিসহ কয়েকজন নেতা এলেও সিতাইয়ে পা রাখেননি কেউ। একাধিক বিধায়ককে মণ্ডল ধরে ধরে দায়িত্ব দেওয়া হলেও দেখা পাওয়া যায়নি। জয়ের আশা অনেক ক্ষীণ ভেবেই এজেন্ট হতে চাইছেন না অনেকে। তৃণমূলের হাতে চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে প্রকাশ্যে প্রচারে দেখা যায়নি অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীদের।
বিধানসভার সিতাই ব্লকের পাঁচটি অঞ্চল দুর্ভেদ্য ঘাঁটি শাসকদলের। সেখানে তৃণমূলের শক্তি বেশি। বিজেপির অভিযোগ, বিজেপির বুথ এজেন্ট হতে রাজি হয়েছে শুনেই তৃণমূলের নেতারা এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আদাবাড়ি অঞ্চলে এজেন্ট হতে চেয়েও অনেকে এই হুমকির জেরে পিছিয়ে এসেছেন। সেই খবর অন্য অঞ্চলগুলিতে পৌঁছে যায়।
তারপর বুথমুখী হতে চাইছেন না এজেন্টরা। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির অন্দরে গুঞ্জন, ৩০০ এর মধ্যে ৮০টি বুথেও এজেন্ট বসানো যাবে কি না, সন্দেহ।
সিতাই উপ নির্বাচনে বিজেপির এই দশাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। হুমকির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ৩০০টি বুথে বিজেপি এজেন্ট দিলে খুশি হতাম। কোনও বুথেই ওদের সংগঠন নেই। এজেন্ট পাবে কিভাবে ওরা? নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে তৃণমূলের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিজেপির সিতাই বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন বলেন, ১০০ শতাংশ বুথেই এজেন্ট দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভোটের দিন কি হবে, বলা যাচ্ছে না। ইলেকশন অবজার্ভারদের আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। আশা করি, কমিশন সুষ্ঠু ব্যবস্থা করবে।