• মাদারিহাট জয়ে ৫২ বুথই পাখির চোখ তৃণমূলের
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: মাদারিহাটে জিততে ৫২টি বুথকে ‘পাখির চোখ’ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জলপাইগুড়ি জেলার অধীন সাঁকোয়াঝোরা-১ ও বিন্নাগুড়ি পঞ্চায়েতের এই বুথগুলি একসময় ‘তুরুপের তাস’ ছিল বিজেপির কাছে। এবার বিধানসভা উপ নির্বাচনে সেখান থেকেই ‘খেলা’ ঘোরাতে মরিয়া রাজ্যের শাসকদল। এদিকে,‘ভোট কিনতে’ বিজেপি টাকা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে জোড়াফুল শিবির। যদিও এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। 


    তবে রাঙালিবাজনার গোপালপুর টি এস্টেটে জন বারলার অনুগামীরা বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের ফ্লেক্স ও পোস্টার খুলে দেওয়ার ঘটনায় যথেষ্টই চাপে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যে সেখানে বারলার কয়েকজন অনুগামী যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে, যা ভোটের মুখে রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতাদের। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ তুলে দু’দিন আগেই বীরপাড়ার মাকরাপাড়ায় এক দলীয় সাংসদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন কর্মীরা। সরাসরি অভিযোগ করেন, তাঁরা প্রচুর পরিশ্রম করে মনোজ টিগ্গাকে বারবার বিধায়ক, সাংসদ করেছেন। কিন্তু ভোটে জিতে তিনি একবারও তাঁদের এলাকায় পা রাখেননি। সেক্ষেত্রে রাহুল লোহারকে কীভাবে বিশ্বাস করবেন দলের কর্মী-সমর্থকরা? বলতে বলতে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন এক কর্মী। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়,প্রচার থামিয়ে মাকরাপাড়া থেকে ফিরে আসতে হয় ওই সাংসদকে। ওই ঘটনা গেরুয়া শিবিরের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। শেষ মুহূর্তে কোন পথে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ হবে, ভেবে পাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা। 


    আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা অবশ্য বলেন, ছাব্বিশে বিজেপি যে রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে, তারই পথ দেখাবে মাদারিহাট। কর্মীদের ক্ষোভ নিয়ে মনোজের সাফাই, একজন সাংসদের পক্ষে সবার কাছে পৌঁছনো সম্ভব নয়। কারও অভিযোগ থাকলে তিনি আমার কাছে আসতে পারেন। টাকা বিলির অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য, বিজেপি টাকা বিলি করছে, এর প্রমাণ দিক। তৃণমূলই চা বাগানে মদ-মাংস পাঠাচ্ছে। 


    পাল্টা তোপ দাগতে ছাড়েননি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বরাইক। বলেছেন, বিজেপি টাকা ছড়াচ্ছে। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কর্মীদের বাগানে রাতপাহারা দিতে বলেছি। 


    তৃণমূল-বিজেপি যুযুধান দু’পক্ষের নজরেই সাঁকোয়াঝোরা ও বিন্নাগুড়ির ৫২টি বুথ। কারণ এবারের লোকসভা নির্বাচনে মাদারিহাট থেকে পদ্ম পার্টি যে ১১ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে, তারমধ্যে সাড়ে সাত হাজার ভোটের ব্যবধান গড়ে দেয় এই বুথগুলি। দু’টি পঞ্চায়েত মিলিয়ে চা বাগানের সংখ্যা পাঁচটি। গেরুয়া শিবিরকে বেগ দিতে চা বলয়ে ঘাঁটি গেড়ে পড়ে থেকে প্রচার চালিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রতিটি বাগানে দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের দু’জন ট্রেড ইউনিয়ন নেতাকে। তাঁদের সঙ্গে একজন পর্যবেক্ষক। এছাড়াও দলের চা শ্রমিক সংগঠনের বাগানের ইউনিট, বুথ সভাপতিরাও মাটিকামড়ে পড়ে থেকেছেন। বিজেপি অবশ্য ঘরে-বাইরে নানা প্রশ্নে জেরবার হয়ে বিধানসভা উপ নির্বাচনেও ‘মোদি’র নামেই ভোট চেয়েছে শেষদিনেও।
  • Link to this news (বর্তমান)