নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অভয়ার খুন-ধর্ষণের ঘটনার ঠিক তিন মাস দু’দিনের মাথায় শুরু হল বিচারপর্ব। সোমবার শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শুরু হয় এই প্রক্রিয়া। প্রথম দিনেই আদালতের রুদ্ধদ্বার কক্ষে অভয়ার বাবা এবং শ্মশানঘাটের সার্টিফিকেটে অভয়ার যে প্রতিবেশী সই করেছিলেন, তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বেলা ২টো থেকে শুরু হয়ে এই পর্ব চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালীন আদালত কক্ষেই হাজির ছিলেন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কড়া নিরাপত্তায় সঞ্জয়কে আদালতে আনা হয়। তাঁর আগেই চলে আসেন অভয়ার ওই প্রতিবেশী, যিনি শ্মশান থেকে দাহ করার শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। কেন তিনি এই সার্টিফিকেট তুলেছিলেন, সেই প্রশ্নে ঘটনার পর থেকে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছিল। ঘটনা নিয়ে পুলিসের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে সই করেছিলেন অভয়ার বাবা। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ময়নাতদন্তের সময় তাঁদের ডাকা হয়নি। তাঁর বক্তব্যও সিবিআই রেকর্ড করেছিল। তাই তাঁকেও এদিন সাক্ষী হিসেবে পেশ করা হয়। এদিনই প্রথমবার তিনি চোখের সামনে সঞ্জয়কে দেখেন। তারপরই কিছুটা ভেঙে পড়েন। আদালত সূত্রে খবর, সাক্ষ্য দিতে গিয়েও একই বক্তব্য রেখেছেন অভয়ার বাবা। সেই রাতে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যে জুনিয়র ডাক্তাররা ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনকে আজ, মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালতে আসতে বলা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে প্রত্যেক দিন চলবে বিচারপর্ব। চার্জশিটে নাম থাকা সাক্ষীদের সবাইকে একে একে ডাকা হবে। আদালত সূত্রে আরও খবর, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার পর এদিনও বিস্ফোরক দাবি করেন অভিযুক্ত সঞ্জয়। তিনি জানান, তাঁকে কিছু বলতে দেওয়া হচ্ছে না। চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে দুই পুলিসকর্তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি।