নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেও শীতের দেখা নেই। কিন্তু ইতিমধ্যেই শীতবস্ত্রের বাজার জমে উঠেছে হাওড়ার মঙ্গলাহাটে। পুজোর বাজার মার খাওয়ায় এখন শীতকালীন বেচাকেনাকে ঘিরেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন মঙ্গলাহাটের হাজার হাজার ব্যবসায়ী। এবারে লুধিয়ানার উলের শীতবস্ত্রের সঙ্গে রীতিমতো টেক্কা দিচ্ছে নন্দীগ্রামে তৈরি জ্যাকেট। হাওড়ার পাশাপাশি ভিন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরাও সোমবার ভিড় করলেন মঙ্গলাহাটে।
সমবায়িকা হাট, নবীন হাট, ফ্যান্সি হাট, মডার্ন হাট ও পোড়া হাট মিলিয়ে হাওড়া ময়দান সংলগ্ন মঙ্গলাহাটে লক্ষাধিক ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে বসেন। পাশাপাশি ফুটপাতে বসেও ব্যবসা করেন অনেকে। মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ বিক্রেতা শীতকালীন পোশাক বিক্রির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজো ও ভাইফোঁটার বেচাকেনার পর লভ্যাংশের টাকা দিয়েই শীতকালীন পোশাক নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবছর পুজোর বাজার ব্যাপক মন্দা যাওয়ায় সেভাবে লাভের অঙ্ক ঘরে তুলতে পারেননি তাঁরা। ভাইফোঁটার সময় বিক্রি খানিকটা বাড়লেও তা আশানুরূপ হয়নি। বাধ্য হয়ে এবছর জমানো পুঁজি ভেঙেই শীতের পোশাক তুলতে হয়েছে মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীদের কথায়, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বড়দিন পর্যন্ত মূলত শীতকালীন পোশাকের ব্যবসা জমে ওঠে। এবছর এখনও শীতের দেখা না মিললেও বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যেই মঙ্গলাহাটে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। সাধারণত উলের তৈরি যাবতীয় শীতবস্ত্র লুধিয়ানা থেকে নিয়ে আসেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। এরপর সেগুলো চলে যায় বিভিন্ন জেলার পাইকারি মার্কেটে। ইতিমধ্যেই মেয়েদের কার্ডিগান, সোয়েটার, টুপি থেকে বাচ্চাদের রকমারি শীতের পোশাকে যেন নতুন করে সেজে উঠেছে মঙ্গলাহাট। তবে এবছর সবথেকে বেশি চাহিদা নন্দীগ্রামে তৈরি লেদার ও কাপড়ের জ্যাকেটের। শুধু এরাজ্যই নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড ছত্তিশগড়ের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো থেকেও এবছর নন্দীগ্রামে তৈরি জ্যাকেটের প্রচুর বরাত এসেছে। পোড়াহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ী শেখ মাসুদ হোসেন বলেন, ‘মাত্র ৪০০ টাকা থেকে কাপড়ের জ্যাকেট ও ৫০০ টাকা থেকে লেদার জ্যাকেটের দাম শুরু হচ্ছে। গত কয়েক বছরে জ্যাকেটের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে।’ মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির (সেন্ট্রাল) সভাপতি মলয় দত্ত বলেন, ‘দু’মাসের শীতকালীন বাজারে অন্যান্য বছর প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলাহাটে প্রায় ২৫ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। আশা করছি, এ বছর বিক্রির অঙ্ক বাড়বে। শীতের বাজার জমে উঠলে তবেই আগামী ঈদ উপলক্ষ্যে প্রচুর সামগ্রী তুলতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।’-নিজস্ব চিত্র