রানাঘাটে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় আবর্জনার স্তূপ, দুর্গন্ধে টেকা দায়
বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: স্বামী বিবেকানন্দ সরণি। রানাঘাট শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রাস্তা। অথচ সেই রাস্তার একটি অংশে তৈরি হয়ে গিয়েছে অপরিকল্পিত ভ্যাট। স্থানীয় কিছু অসচেতন মানুষ এবং পুরসভার উপযুক্ত সদিচ্ছার অভাবে শহরে প্রবেশদ্বার জুড়ে রীতিমতো আবর্জনার স্তূপ। পরিস্থিতি ক্রমশ এতটাই বেগতিক হয়ে যায় যে, সরাসরি এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে পুর এবং নগরোন্নয়ন দপ্তরে! যদিও তারপরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
স্টেশনের দিক থেকে স্বামী বিবেকানন্দ সরণি ধরে আনুলিয়ার দিকে খানিক এগিয়ে এলেই রাস্তার ঠিক ডানপাশে জমেছে আবর্জনার সেই স্তূপ। যা রাস্তার ঠিক মাঝখানে ক্রমশ চওড়া ভ্যাটে পরিণত হচ্ছে। সারাদিন বিভিন্ন গাড়ির চাকায় চাকায় রাস্তাজুড়ে তার ছড়াছড়ি তো হচ্ছেই, একইভাবে উৎকট গন্ধে আশপাশের দোকানদার এবং বাসিন্দাদের টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে ওই এলাকায়। এখানে পরিস্থিতির পিছনে অবশ্য স্থানীয় কিছু অসচেতন মানুষই দায়ী। সচেতন অংশের মতে, তাঁরা আশপাশের এলাকা থেকে বাড়ির ময়লা এই জায়গায় এসে ফেলে যান। আবার মাঝেমধ্যে নাকি আবর্জনা সংগ্রহকারী পুরসভার ছোট গাড়িও খালি করা হয় শহরের সেই রাস্তাতেই। নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড থাকতে, এলাকা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে ছোট বাড়িগুলি ওই জায়গায় কেন ফেলে, সেটা নিয়েও অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে আবার রাতের অন্ধকারে নাকি মরা পশুও ফেলে যান ওই জায়গাতে। ফলে পরদিন উৎকট গন্ধেএলাকায় থাকাই যায় না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শুভ ধর বলেন, আশপাশ থেকে মাঝেমধ্যেই দেখি লোকে ময়লা এনে এখানে ফেলে চলে যান। মাঝেমধ্যে পুরসভার গাড়িও একই কাজ করে। আমরা সারাদিন আশপাশে থাকি। পচা দুর্গন্ধে টিকতে পারি না। সেইসঙ্গে অনিয়মিত সাফাই তো রয়েছেই। একই অভিযোগ তুলেছেন তাইবুল ইসলামও। তাঁর মতে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় স্বামী বিবেকানন্দ সরণী। সেখানের একপাশ জুড়ে আবর্জনার স্তূপের কারণে রাস্তাটি ও সংকীর্ণ হয়ে যায়। তারজন্যে যানজট তো লেগেই থাকে। শুধু কী তাই? সারাদিন টোটো অথবা অটোর চাকায় রাস্তার চারপাশে ছড়িয়ে যায়। গোটা এলাকা অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে।
প্রসঙ্গত, পুরসভা কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না দেখে, সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরে। স্থানীয়দের দাবি, এরপর দায় ছাড়া কাজ হিসেবে পুরসভা আবর্জনা ফেলার নিষেধাজ্ঞা টাঙিয়ে একটি ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছে। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাই ক্ষুব্ধ স্থানীয় দোকানদার এবং বাসিন্দাদের মতে, প্রকাশ্য রাস্তায় এরকম আবর্জনার স্তূপ সরাতে কি এবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখতে হবে?
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। রানাঘাট শহরকে আমরা যথেষ্ট গুছিয়ে এবং সাজিয়ে তুলতে পেরেছি আগের থেকে। পুরসভা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। আমরা মানুষকে সচেতন করার জন্য ফেস্টুন লাগিয়েছি। কিন্তু নিজেদের এলাকাকে পরিষ্কার রাখতে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। তবে ওই এলাকায় যাতে আর আবর্জনার স্তূপ না জমে, তার জন্য আমি উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব।