বাংলাদেশি নাগরিকদের বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে সরগরম ঝাড়খণ্ডের রাজনীতি। এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও এই ধরনের অভিযোগ উঠে আসছে বহু দিন ধরেই। এই আবহে অনুপ্রবেশের সঙ্গে যুক্ত আর্থিক তছরুপের তদন্তে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় আজ তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ মোট ১৭টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ইডি। উল্লেখ্য, আগামিকাল ১৩ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে প্রথম দফায় নির্বাচন হবে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও উপনির্বাচন হওয়ার কথা আগামিকাল। এই আবহে ভোটের একদিন আগে এই তল্লাশি অভিযান বেশ উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এর আগে সেপ্টেম্বর মাসেই পিএমএলএ-র অধীনে মামলা রুজু করে এই মামলায় তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। অভিযোগ ওঠে, বাংলাদেশ থেকে মহিলাদের পাচার করে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে আসা হচ্ছিল। জানা যায়, এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা রুজু করা হয়েছিল। সেই অভিযোগকারী নিজে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পার করে বেআইনি ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। পরে তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে স্থানীয় এক রিজর্টে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। পরে সেই অভিযোগকারী অনুপ্রেশকারী ৫-৬ জন মহিলাদের নামও লে তদন্তকারীদের। তাঁদের কাছ থেকে আবার একটি 'ভুয়ো' আধার কার্ডও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
এর আগে ঝড়খণ্ডে এক নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্য জুড়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বসবাসের জায়গা করে দিচ্ছে সরকারপক্ষ। প্রধনমন্ত্রী বলেছিলেন, 'তোষণার রাজনীতিকে চরমে নিয়ে গিয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস এবং আরজেডি। এই তিনটি দলই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট পাওয়ার জন্যে এদের গোটা রাজ্যে বসবাসের জন্যে জায়গা করে দিচ্ছে এই তিনটি দল। পরিস্থিতি এখানে এমন হয়ে গিয়েছে যে সরস্বতী বন্দনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে বিপদ কতটা বড়। যখন উৎসবে পাথর ছোঁড়া হয়, দুর্গা মাকেও আটকে দেওয়া হয়, যখন কার্ফু জারি করা হয়, তখন জানা যায়, যে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। মেয়েদের সঙ্গে বিয়ের নাম করে প্রতারণা হচ্ছে। তখন বুঝতে হবে, জল মাথার ওপর দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। যখন অনুপ্রবেশের মামলা আদালতে যায়, কিন্তু প্রশাসন সেটা অস্বীকার করে, তখন বুঝতে হবে সরকারতন্ত্রেই অনুপ্রবেশ হয়ে গিয়েছে।'
এদিকে এই একই ইস্যুতে বাংলার উদাহরণ তুলে ধরে অমিত শাহ বলেছিলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। কারণ সেখানে স্থানী প্রশাসনই অনুপ্রবেশে মদত দেয়। ঝাড়খণ্ডেও একই কারণে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন এখানেও অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখানে বিজেপি সরকার গঠন হলে দলের নেতা-কর্মী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, সবাই অনুপ্রবেশ আটকাবেন। অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো হবে দেশ থেকে।' শাহ আরও বলেছিলেন, 'সাঁওতাল পরগনায় আদিবাসী মানুষের সংখ্য়া ক্রমেই কমছে। অনুপ্রবেশকারীরা আসছে দলে দলে। আমাদের মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে। তাদের জমি দখল করছে। এটা যদি বন্ধ করা না যায় তবে ঝাড়খণ্ডের পরিচিতি, তাদের সংস্কৃতি, কাজের সুযোগ, জমির অধিকার, মেয়েদের সুরক্ষা কোনওটাই রক্ষা করা যাবে না। সেকারণেই বিজেপি স্লোগান তুলছে - রোটি, বেটি আর মাটি। ঝাড়খণ্ডে নারী নির্যাতনকারী অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।'