স্থানীয় সূত্রে খবর, জয়পুর থানার ফুটকরা গ্রামে মা-বাবার সঙ্গেই থাকতেন ছোট ছেলে স্বরূপ মেদ্যা। পরিবারের দাবি, গত দু’দিন ধরে স্বরূপ অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। তাতে পরিবারের সকলে ভয় পেয়ে যান। মানসিক অবসাদে ছেলে খারাপ কিছু করে বসতে পারে, এই আশঙ্কায় সোমবার রাতে স্বরূপকে কাছছাড়া করতে চাননি মমতা। তিনি রাতে ছেলের ঘরেই শুতে চান। ওই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু দরজায় ছিটকিনি দেওয়া নিয়ে ছেলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় মমতার। ঘর বন্ধ করে ছেলেকে ঘুমোতে বারণ করেছিলেন তিনি। তাতেই মাকে মারধর করেন যুবক। মমতার মাথা ক্রমাগত ঘরের দেওয়ালে ঠুকতে থাকেন স্বরূপ।
দেওয়ালে আঘাতের শব্দ এবং আর্তনাদ শুনে পরিবারের সদস্যেরা স্বরূপের ঘরের সামনে ছুটে গিয়েছিলেন। বার বার দরজা খোলার অনুরোধ করেন সবাই। কিন্তু যুবক দরজা খোলেননি। প্রায় দশ মিনিট ধরে এ ভাবে চলার পর ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন স্বরূপ। পরিবারের অন্যান্য সদস্য ঘরে ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় মমতাকে উদ্ধার করেন। মহিলাকে জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা মমতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার সকালে মমতার স্বামী অশোক মেদ্যা ছেলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে স্বরূপকে গ্রেফতার করেছে জয়পুর থানার পুলিশ। অশোক বলেন, ‘‘আমার ছোট ছেলে মানসিক ভাবে অসুস্থ। মাঝে বেশ কিছু দিন সুস্থ ছিল। গত দু’দিন আবার অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছিল। ছেলে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারে, সেই ভয়ে আমার স্ত্রী ছেলের ঘরে শুতে গিয়েছিল। কিন্তু ছেলে যে এমন কাণ্ড ঘটাবে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।’’
মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনা নিয়ে বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে হাজির করে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। খুনের ‘মোটিভ’ জানার চেষ্টা করছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃতার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’