অনলাইন ক্লাসের সুবিধার জন্য একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দিয়ে থাকে মমতার সরকার। দুর্গাপুজোর আগে ওই অর্থ পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু অনেক পড়ুয়াই ট্যাবের টাকা পাননি বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তে উঠে এসেছে, ৩০০-র বেশি পড়ুয়ার টাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। আবার মুর্শিদাবাদ জেলারই প্রায় পাঁচ হাজার পড়ুয়া ট্যাবের জন্য দ্বিগুণ অর্থ অর্থাৎ ২০ হাজার টাকা করে পেয়েছে। যদিও ওই টাকা তোলার আগে অ্যাকাউন্টগুলি ‘ফ্রিজ়’ করে দিয়েছে প্রশাসন। নবান্নের নির্দেশে এই পুরো ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
টিঁয়া শান্তি সুধা দাস বিদ্যামন্দির সূত্রে খবর, অন্যান্য পড়ুয়া ট্যাবের জন্য বরাদ্দ টাকা পেয়ে গেলেও ১৫ জন টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেন। তার প্রেক্ষিতে প্রধানশিক্ষক যোগাযোগ করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। খোঁজখবর করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক জানায় আইএফএসসি কোড পরিবর্তন করে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাক্রমে স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয় থানায়। পুলিশ ওই অভিযোগপত্র পাঠিয়ে দেয় সাইবার অপরাধ শাখায়। তাদের তদন্তে উঠে এসেছে, বিহারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ১৫ পড়ুয়ার টাকা ঢুকেছে। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর এক হলেও আইএফএসসি কোড পরিবর্তন করে ওই জালিয়াতি করা হয়েছে। এ-ও জানা যাচ্ছে, ১৫টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১৪টিতে জমা হওয়া টাকা তুলেও নিয়েছে প্রতারকেরা। এখন অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে আলাদা করে অভিযোগ জানিয়েছেন কয়েক জন অভিভাবক।
অন্য দিকে, টাকা না পেয়ে মনখারাপ সালারের স্কুলের ১৫ পড়ুয়ার। নাসরিন পারভিন নামে একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘অন্য সহপাঠীরা টাকা পেলেও আমার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। আমি বাবাকে নিয়ে হেডস্যরের কাছে যাই। এখন শুনছি, আমাদের টাকা বিহারে চলে গিয়েছে! কী ভাবে টাকা ফেরত পাব জানি না।’’ স্কুলের প্রধানশিক্ষক অলোক নাথ দে বলেন, ‘‘আমরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে প্রতারকেরা সবাই বিহারের বাসিন্দা। বাকিটা পুলিশ তদন্ত করছে। আশা করছি অপরাধীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’