নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: আজ, বুধবার তালডাংরা বিধানসভার ২ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৯৭ জন ভোটার পাঁচজন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ওই বিধানসভার ২৬৪টি বুথের সবগুলিতেই নির্বাচন কমিশনের তরফে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও কারণে ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হলে বুথের ভোটদান পর্ব যাতে রেকর্ড করা হয়, তা কমিশন নিশ্চিত করতে চাইছে। তালডাংরা বিধানসভার ২১টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে কমিশনের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওইসব বুথের জন্য নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিধানসভা কেন্দ্রের তালডাংরা, সিমলাপাল ও ইন্দপুর ব্লকেই স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে।
ভোটের আগে দুই যুযুধান শিবির তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। শেষ দিনের প্রচারে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট ‘কেনার’ অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। মঙ্গলবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার প্রমাণ কেউ দেখালে, আর্থিকভাবে রাজ্যের শাসক দল ‘পুরস্কৃত’ করবে বলে ভোটারদের বলা হয়েছে।
অরূপবাবু বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়মে বুথের মধ্যে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করা যায় না। এটা সুভাষবাবুর জানা উচিত। বাঁকুড়া শহরে সুভাষবাবুর নার্সিংহোম সংলগ্ন একটি হোটেলে ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের এনে রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি পুলিসকে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মানুষ বিজেপি-র সঙ্গে নেই। ফলে ওরা জোর করে ভোট আদায় করতে চাইছে। বিজেপি কাউকে ভোটদানে বাধা দিলে, সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা তা রুখে দেবে।
সুভাষবাবু বলেন, পরাজয়ের আশঙ্কায় তৃণমূল আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। আমরা গুন্ডাগিরিতে বিশ্বাসী নই। মানুষকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিতে হবে। আসলে ওরাই মোবাইলে ভোটদানের ছবি তুলে এনে দেখানোর জন্য ভোটারদের বলছে। তার বিনিময়ে তারা ভোটারদের টাকা দেবে বলছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তালডাংরা বিধানসভা এলাকায় পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ২২ হাজার ৫০৯ জন। এখানে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৯৮৮ জন। মোট ৩১টি সেক্টর অফিস খোলা হবে। আদিবাসী সংস্কৃতি ও পাঁচমুড়ার টেরাকোটা সহ অন্যান্য বিষয়ের উপর পাঁচটি মডেল বুথ থাকবে। এদিন সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিসিআরসি থেকে ১০৬৪ জন ভোটকর্মী ইভিএম, ভিভিপ্যাট, কাগজপত্র সহ বুথের উদ্দেশে রওনা দেন। ২০ শতাংশ ভোট কর্মীকে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে। এবার অবশ্য কোনও মহিলা কর্মীকে ভোট গ্রহণের জন্য নেওয়া হয়নি। কর্মী ঘাটতি না হওয়ার কারণেই প্রশাসন ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারের উপ নির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের পাশাপাশি একজন নির্দল প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, তালডাংরা উপ নির্বাচনের জন্য জেলায় মোট ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রতিটি বুথে চারজন করে জওয়ান থাকবেন। বুথের পাশাপাশি ‘ক্যুইক রেসপন্স টিমেও’ (কিউআরটি) কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।