ভাঙনে নামখানার একটি গোটা মৌজার অস্তিত্বই এখন সঙ্কটে
বর্তমান | ১৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: নামখানার নারায়ণগঞ্জ মৌজার অস্তিত্বই এখন সঙ্কটের মুখে। হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী গিলে খেয়েছে এই মৌজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বাকি যেটুকু জমি রয়েছে, তা বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত চলছে লড়াই। গত পূর্ণিমার কটালেও বাঁধের বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের তিনটি জায়গায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। তাতে ২৫ জন গ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবারই বেশ কিছুটা করে কৃষিজমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা নিরঞ্জন ধাড়া বলেন, বাবা জীবিত থাকাকালীন আমাদের অনেকটাই জমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল। এরপর আমি আরও প্রায় কুড়ি বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে যেতে দেখেছি। এই বছর নদীবাঁধের পাশে দেড় বিঘা জমিতে দুধেশ্বর ধানের চাষ করেছিলাম। গত পূর্ণিমার কটালে ধানের ক্ষেত সমেত প্রায় ১৫ কাঠা জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। বাকি ১৫ কাঠা জমিরও সব ধান বাড়িতে নিয়ে আসতে পারব না। নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রিঙ্কু দাস জানা বলেন, অতীতে সুবিশাল এলাকা জুড়ে নারায়ণগঞ্জ মৌজা ছিল। নদীর ভাঙনের ফলে এখন এই এলাকা অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে। দুই কিলোমিটার লম্বা ও এক কিলোমিটার চওড়া দীর্ঘ অঞ্চল নদী গিলে খেয়েছে। বহু পরিবার এই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বাড়ি করেছেন। কিন্তু এই মৌজার বিপরীত দিকে হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীতে একটি নতুন চরের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে এই এলাকা ক্রমশঃ ভাঙছে। এছাড়াও প্রতিদিন হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর মাঝখানে নারায়ণগঞ্জের কাছাকাছি প্রায় ১০০টি করে বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ দাঁড়িয়ে থাকে। সেই জাহাজগুলিতে ধাক্কা খেয়ে নদীর স্রোত উল্টে এসে আমাদের পাড়ে ধাক্কা দিচ্ছে। এই কারণে এই অঞ্চলে নদীর ভাঙন আরও বেড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার এই অঞ্চলের নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন সেচদপ্তরের প্রধান সচিব মণীশ জৈন। তিনি বলেন, এলাকাটি পরিদর্শন করলাম। আগামী দিনে ভাঙন রোধে কী করা যায়, ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলোচনা করব।