নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মালিক পক্ষের এক শরিক ঘর না ছাড়ায় প্রোমোটিংয়ের কাজে বাধা আসছিল। উচিত শিক্ষা দিতে সেই শরিকের ১২ বছরের নাবালিকা মেয়েকে ঘরে ঢুকে যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। এমনকী পরে ঘটনার প্রতিবাদ জানালে নির্যাতিতা কিশোরীর মাকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করে প্রোমোটার। ঘটনার সাড়ে আট মাস পর জামিনে থাকা অভিযুক্ত প্রোমোটার সুদর্শন চন্দকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। শিয়ালদহের বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস অপরাধীকে মারধর ও যৌন নির্যাতন চালানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেন। এদিন বিচারক সুদর্শনকে জানিয়ে দেন, অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল। আজ, বুধবার প্রোমোটারের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করবে আদালত। এদিকে, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রোমোটার। শিয়ালদহ কোর্টের পুলিস লকআপে নিয়ে যাওয়ার সময়, সে বলে, আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। যদিও এই মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমার পুরো বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অপরাধী শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আমরা সরকার পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করছি। এই মামলার সওয়ালে আমরা অপরাধীর কড়া সাজা চেয়েছি।’
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতার ট্যাংরা থানা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন দুপুরে ঘরে একাই ছিল ওই কিশোরী। তার মা বড় মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে ওই প্রোমোটার আচমকা ঘরে ঢুকে কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতন চালায়। ভয়ে কিশোরী লুকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। কিশোরীর চিৎকারে এক সময়ে প্রোমোটার ঘর থেকে পালিয়ে যায়। প্রোমোটার ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখে ফেলেন দু’একজন প্রতিবেশী। এদিকে, বড় মেয়েকে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে এলে প্রতিবেশীরা পুরো বিষয়টি তাঁকে জানান। মেয়েটিও কাঁদতে কাঁদতে বিষয়টি তার মাকে জানায়। এনিয়ে তার মা প্রতিবাদ জানাতে গেলে প্রোমোটার তাঁকে মারধর করে। এমনকী তাঁর চুলের মুঠি ধরেও টানতে শুরু করে। বিষয়টি পুলিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে পকসো ছাড়াও একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট পেশ করা হয়। শুরু হয় মূল মামলার বিচার। সাক্ষ্য দেন দশজন। শেষপর্যন্ত আদালত প্রোমোটারকে দোষী সাব্যস্ত করে।