• ভাসান শেষে চন্দননগরে বিষাদ, সব রোশনাই শুষে উজ্জ্বল রিষড়া
    বর্তমান | ১৩ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: উৎসব শেষে চন্দননগরে এখন বিষাদের ছায়া। রকমারি আলোকসজ্জা এই ক’দিন চমক দেখিয়েছে সবাইকে। প্রতিমা ভাসান শেষে শহর ফিরছে পুরনো ছন্দে। উল্টোদিকে আলোকসজ্জা এবং থিমের অনবদ্য পসরা সাজিয়ে উৎসবমুখর রিষড়া। 


    এখন এ শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসব। মঙ্গলবার অলিগলিতে পর্যন্ত ভিড়। বর্তমানে পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। জৌলুস বেড়েছে। ফলে আকর্ষণও বেড়েছে। উৎসব মরশুমের শেষ পর্বে সম্মোহনের রংমশাল জ্বালিয়ে বসেছে রিষড়া। মানুষ এখন ছুটছেন হুগলির প্রান্তভাগের এই জনপদে।  


    এবার প্রায় ১২০টি পুজোর আয়োজন হয়েছে এখানে। এ শহর চিরে চলে যাওয়া রেললাইনের দু’ধারে সারি সারি থিমের পুজো। তার চোখধাঁধানো শোভা। দুবাইয়ের মিরাকেল গার্ডেন থেকে পৌরাণিক চক্রব্যূহের আধুনিক ব্যাখ্যা, হীরক রাজার দেশ থেকে রসগোল্লার জন্মকথা, সবই আছে থিমে। আর আছে আলোর বন্যা। নানা ছাঁদের, নানা কায়দার আলোর বাহারে রিষড়া যেন চন্দননগরের পুজোগুলিকে টেক্কা দেওয়ার ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে।


    এখানকার অন্যতম পুরনো পুজোটি করে সারদামাতা ফরোয়ার্ড ক্লাব। সেই ক্লাবের মাঠে এবার তৈরি হয়েছে চক্রব্যূহ। মহাভারত থেকে আধুনিক সময়কালে যাত্রা করেছে চক্রব্যূহ, একাধিক ঘড়ির ব্যবহারে তা তুলে ধরা হয়েছে। ক্লাব কর্তাদের দাবি, চক্রব্যূহে আটকে পড়া মানুষের বদল হয়েছে কিন্তু ব্যূহটা আছেই। বর্তমানে নারী সেই চক্রব্যূহের অভিমন্যু। মণ্ডপজুড়ে নারীর নানা অনভূতির কোলাজ, পৌরাণিক চরিত্রদের চাঁদমালায় তুলে ধরে অন্যরকমের মণ্ডপসজ্জা করেছেন উদ্যোক্তারা। ভিড়ও হচ্ছে প্রবল। আর একটি পুরাতন পুজো হল, লেনিন মাঠ যুবগোষ্ঠী। সেখানকার মণ্ডপে গড়ে উঠেছে দুবাইয়ের মিরাকেল গার্ডেন। ২০১৩ সালে দুবাই ল্যান্ডে ওই বাগান তৈরি হয়। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক ফুলের বাগান। সেখানে ফুল ও ফুলের গাছ দিয়ে নানা অবয়ব গড়া আছে। সেই আদলকেই রিষড়ার মাঠে এনে ফেলেছেন উদ্যোক্তারা। ঘরের কাছে দুবাই দেখার সুযোগ পেয়ে বহু মানুষ সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। রাতে বিশেষ আলোকসজ্জা গোটা বাগান ঘিরে। সেটিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নতুন পুজো করছে নবারুণ সঙ্ঘ। তাদের থিম, ‘হীরকরাজার দেশে’। সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত গল্প ও সিনেমার অনুসরণে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন হয়েছে। প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। হাতে গরম রসগোল্লার স্বাদ ও মণ্ডপসজ্জা দেখতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে দেওয়ানজি স্ট্রিটের যুবক সঙ্ঘে। সেখানে রসগোল্লার উৎপত্তির গল্প হচ্ছে থিম। সুদৃশ্য মণ্ডপসজ্জার সঙ্গে মণ্ডপেই তৈরি হচ্ছে সত্যিকারের রসগোল্লা। তা মুখে ফেলে টইটই করতে বেরিয়ে পড়ছে দর্শক। এখন গভীর রাত পর্যন্ত রেললাইনের দু’পারই বিপুল সংখ্যক জনতার পদশব্দে সরগরম। 
  • Link to this news (বর্তমান)