সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: সুন্দরবন অঞ্চল জুড়ে বাড়ছে হারিয়ে যাওয়া হরিণখুরা ও মালাবতী ধানের চাষ। জানা গিয়েছে, প্রায় ৫০ বছর আগে সুন্দরবন অঞ্চলে এই ধানগুলি চাষ করা হতো। বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ বছর ধরে আর এই ধান চাষ করা হচ্ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময়ে ফের এই ধানের চাষ বাড়ছে। চলতি বছরেই সুন্দরবনের প্রচুর কৃষক এই ধানগুলি চাষ করেছেন। এই অঞ্চলের কয়েকশো বিঘা জমিতে হরিণখুরা ও মালাবতী ধান চাষ করা হয়েছে। মূলত এই অঞ্চলে ধনুরবান, সন্তোষী, দুধেশ্বর, হাজার ১৭, প্রতীক্ষা ও সুপার শ্যামলী ধান সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে। নিচু জমিগুলিতে মরিশাল ধান চাষ করা হয়।
এ বিষয়ে কৃষি গবেষক শুকদেব সামন্ত বলেন, অতীতে সুন্দরবন অঞ্চলে হরিণখুরা ও মালাবতী ধান প্রচুর চাষ হতো। লোক মুখে প্রচার রয়েছে, কোনও পদ ছাড়াই মালাবতী চালের পান্তা খাওয়া যায়। এই চালের ভাতেরও সুগন্ধ রয়েছে। চাষ করলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাত মন ধান পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রচুর বৃষ্টিতে এই ধান চাষের কোনও সমস্যা হয় না। জমিতে জল বাড়লে ধান গাছও বাড়তে থাকে। মালাবতী ধান গাছ সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার হয়। ধানগুলি মোটা ও লম্বায় প্রায় হাফ ইঞ্চি হয়। তবে হরিণখুরা ধান সরু হয়। লম্বায় হাফ ইঞ্চি। এই ধানের ভাত, চিড়ে, মুড়ি ও খই হয়। চারার অঙ্কুর থেকে ধান গাছ কাটা পর্যন্ত প্রায় ১৪০ দিন সময় লাগে। এই ধানের ফলন খুব ভালো হয়ে থাকে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১৩ মন করে ধান পাওয়া যায়। বিশেষত্ব হল, এই ধানের দুই দিকে হরিণের খুড়ের মত কালো দাগ দেখা যায়। এমনকী এই ধানের চালে খিচুড়ি ও পায়েস খুব ভালো হয়।