• ফের বাসের রেষারেষির বলি, মায়ের স্কুটারে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিক মৃত্যু স্কুলপড়ুয়ার
    বর্তমান | ১৩ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: মায়ের স্কুটারে চেপে স্কুল থেকে ফিরছিল পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। তার আর বাড়ি ফেরা হল না! বেপরোয়া বাসের রেষারেষির বলি হল ১১ বছরের স্কুলছাত্র! মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হল তার। কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছেন ছাত্রের মা এবং তার দু’বছরের মামাতো বোন। মঙ্গলবার সল্টলেক ২ নম্বর গেটে এই দুর্ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার মানুষ। দফায় দফায় অবরোধ করে উত্তেজিত জনতা। প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধের জেরে সল্টলেক ও উল্টোডাঙা থেকে বাইপাসে ওঠার রাস্তায় ব্যাপক যানজট হয়। কাজের দিনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। মৃত ছাত্রের বাবা বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ করে জানান, দু’টি বাসের রেষারেষিতে তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস দুই বাসচালককে গ্রেপ্তার করেছে। 


    পুলিস জানিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার নাম আয়ূষ পাইক (১১)। সে কেষ্টপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মানিকতলা থানা এলাকায় ই এম বাইপাস সংলগ্ন ১৯/২২, ক্যানাল সার্কুলার রোডে তার বাড়ি। প্রতিদিনই মায়ের স্কুটারে চেপে সে স্কুলে আসা-যাওয়া করত। এদিনও স্কুটারে মা নুরজাহান পাইকের পিছনে বসে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। সামনে ছিল নুরজাহানের দাদার মেয়ে, ২ বছরের আফরোজা খাতুন। তিনজনের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। অভিযোগ, ২১৫ এ/১ রুটের দু’টি বাস বেপরোয়াভাবে রেষারেষি করছিল। বেলা ১১টা নাগাদ নুরজাহান যখন সল্টলেক ২ নম্বর গেটের সিগন্যালের কাছে আসেন, তখন একটি বাস তাঁর স্কুটারের পিছনে ধাক্কা মারে। জোরালো ধাক্কায় নুরজাহান ও আফরোজা বাঁদিকে পড়ে যান। ডানদিকে ছিটকে পড়ে আয়ূষ। তার মাথা ও পেটে গুরুতর আঘাত লাগে। পরপর দু’টি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। নুরজাহানের চোট গুরুতর না হলেও ছোট্ট আফরোজাকে এন আর এস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের বাড়ি সহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 


    এদিকে, স্কুলছাত্রের মৃত্যুর পর তার দেহ নিয়ে ২ নম্বর গেটের সামনে হাজির হয় উত্তেজিত জনতা। বেলা ১টা নাগাদ শুরু হয় অবরোধ। ২ নম্বর গেট থেকে সল্টলেকের অভ্যন্তরেও তীব্র যানজট শুরু হয়। হাডকো মোড় থেকে বাইপাসে ওঠার রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় পুলিস। দুর্ভোগে জেরবার হতে হয় অসংখ্য মানুষকে। বিকেল ৩টে নাগাদ অবরোধ উঠলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। মৃত শিশুর বাবা তারক পাইক বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘প্রতিদিন আমার স্ত্রীর সঙ্গেই ছেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরত। ও খুব সাবধানে এবং ভালোভাবে স্কুটার চালায়। বাসের রেষারেষির জন্য এই সর্বনাশ ঘটে গেল।’ পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার পরই ঘাতক বাসটিকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই চালককে।
  • Link to this news (বর্তমান)