প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগতদের এনে জড়ো করেছে তৃণমূল। কেশপুর, গড়বেতা-সহ বিভিন্ন এলাকার লোকেদের আজ, বুধবার উপনির্বাচনের দিনে অশান্তি ও বুথ দখলের জন্য মেদিনীপুরে এনে রাখা হয়েছে। কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে তারা। কোথায় কোথায় বহিরাগতেরা রয়েছে, তা-ও জানিয়েছে বিজেপি। ডেবরায় ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘ওদের কাছে খবর আছে, তৃণমূলের একটা বিরাট অংশ প্রার্থীকে সমর্থন করছে না। আর জি কর-কাণ্ডের পরে মহিলারা তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। কুড়মি সমাজ ও জনজাতিরাও প্রতারক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর প্রার্থীকে ভোট দেবে না। তাই আজ বিকেল থেকেই পুলিশের অত্যাচার শুরু হয়েছে গ্রামীণ এলাকায়।’’ শুভেন্দুর দাবি, ‘‘আমাদের কর্মীদের অবৈধ ভাবে গ্রেফতার করেছে। এঁরা সব পোলিং এজেন্ট।’’ বিরোধী নেতার হুঁশিয়ারি, ‘‘বুধবার ডেবরা, চন্দ্রকোনা, খড়্গপুর ও ভীমপুরে আমাদের জমায়েত থাকবে। প্রয়োজনে সড়ক অবরোধ হবে। আর সন্ধ্যা ৬টার পরে দিলীপ ঘোষ, সৌমেন্দু অধিকারী ও আমাদের সকলের উপস্থিতিতে পুলিশ সুপারের অফিস ঘিরে রাখব। শেষ পর্যন্ত লড়ব!’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘হারবে জেনে আগে থেকে অজুহাত তৈরি করছে। নাচতে না-জানলে উঠোন বাঁকা! নির্বাচন কমিশন ওদের, কেন্দ্রীয় বাহিনী ওদের। কথায় কথায় হুঙ্কার এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ভোট করাবে! এখন কোথায় গেল? যান না ওদের কাছে!’’
ভোট নিয়ে আশঙ্কায় আছে অন্য বিরোধীরাও। রানিগঞ্জে দলের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘উপনির্বাচন থেকে শুরু করে যে কোনও ধরনের নির্বাচনে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে, ভোট লুট করে জিতছে তৃণমূল। জনসাধারণের ক্ষোভের আঁচ নিয়ে রাজ্য সরকার নিজেকে শুধরে নিক। না-হলে রাজ্যের সমূহ বিপদ, তার থেকেও বড় বিপদ তৃণমূলের।’’ তাঁর দাবি, বেআইনি অস্ত্র-বোমা উদ্ধার করতে হবে। দুষ্কৃতীদের সতর্কতামূলক গ্রেফতার করতে হবে। হাড়োয়ার আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম ওই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি পাঠিয়ে শাসন, দেগঙ্গা ও হাড়োয়া থানা এলাকার কিছু বুথের তালিকা দিয়ে সেগুলিকে ‘স্পর্শকাতর’ ঘোষণা এবং পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, গত তিনটি নির্বাচনে হাড়োয়ায় গোলমাল হয়েছে। এ বারও আশেপাশের বিধানসভা এলাকা থেকে শাসক দলের মদতে দুষ্কৃতী বাহিনী ঢুকে ভোট ‘লুট’ করতে পারে।