স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাটপাড়া থানা এলাকায় সকালে আচমকাই একের পর এক বোমাবাজি হয়। থানার কাছাকাছি একটি চায়ের দোকানে বসে তখন আড্ডা দিচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা অশোক। অভিযোগ, হঠাৎ ওই চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ে জনা কয়েক দুষ্কৃতী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা শুরু করে তারা। চায়ের দোকানের ভিতরে এবং বাইরে শুরু হয় বোমাবাজি। অশোককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এখানেই শেষ নয়। ওই চায়ের দোকানের জিনিসপত্র তছনছ করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
দোকানদারের দাবি, দোকানে খুব ভিড় ছিল। তিনি চা বানাতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎই গোলমাল শুরু হয় দোকানের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু বুঝতে পারিনি। অশোকবাবু রোজই আমার দোকানে চা খেতে আসেন। তাঁর গায়ে গুলি লেগেছে। আমার দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’’ যদিও কে বা কারা এর পিছনে রয়েছেন, তা বলতে পারেননি ওই চায়ের দোকানদার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছে, রাস্তা থেকে বোমাবাজি করতে চায়ের দোকানে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে এবং তৃণমূল নেতাকে গুলি করে তারা পালিয়ে যায়।
গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। যদিও এখনও অভিযুক্তদের খোঁজ মেলেনি। অন্য দিকে, শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, জখম তৃণমূল নেতার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু তার মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে অশোকের।
প্রসঙ্গত, বুধবার নৈহাটি বিধানসভায় উপনির্বাচন চলছে। সেখানে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিলেছে। তার মধ্যে ভাটপাড়ায় ওই গন্ডগোলের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলেই আক্রান্ত হতে হয়েছে তৃণমূল নেতা অশোককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালে এক বার অশোকের উপর হামলা হয়েছিল। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘তিন জন চায়ের দোকানে ঢুকে অশোক সাউকে গুলি করে। স্থানীয়দের দাবি, একটি বোমাও ছোড়া হয়। অশোকবাবুর পিঠে গুলি লেগেছে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ অলোক আরও বলেন, ‘‘২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক বার আক্রান্ত হয়েছিলেন অশোক। সে বার আকাশ নামে এক অভিযুক্তের খোঁজ মেলে। পরে তিনি মারা যান। এ বারের ঘটনায় কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই অভিযুক্তদের ধরা হবে।’’