সম্প্রতি পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য দেওয়া সরকারি টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি বলে অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কেউ কেউ আবার অভিযোগ তুলেছে, তাদের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। সেই অভিযোগে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, তখনই প্রকাশ্যে এল পুরুলিয়ার আবাস ‘কেলেঙ্কারি’র খবর। অভিযোগ, উপভোক্তার অজান্তেই তাঁর নামে আসা তিন লক্ষের বেশি টাকা তুলে নিয়েছেন কেউ।
অভিযোগ, রঘুনাথপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের নামে বরাদ্দ আবাস যোজনার টাকা নয়ছয় হয়েছে। অভিযোগ, ২০১৬-১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ির আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়ি পাননি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর নাম তালিকায় নেই। তার পর ছ’-সাত বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু গত ২৫ অক্টোবর রঘুনাথপুর পুরসভার পক্ষ থেকে দেবাশিসের কাছে একটি চিঠি আসে। তাতে লেখা, আবাসের অসম্পূর্ণ বাড়ি দ্রুত শেষ করতে হবে! চিঠি পেয়ে হতবাক হয়ে যান দেবাশিস। আবাস যোজনার পোর্টালে গিয়ে তিনি দেখেন, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁর নামে তিন লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। অথচ তাঁর অ্যাকাউন্ট কানাকড়িও ঢোকেনি!
‘ভূতুড়ে’-কাণ্ড নজরে আসতেই দেবাশিস সরাসরি যোগযোগ করেন পুরসভার সঙ্গে। তিনি মনে করেন, তাঁর নামে আসা টাকা কেউ ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ তুলে নিয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, আবাসের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। তদন্তের দাবিতে সরব তারা। রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান তরণী বাউরির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং ভুক্তভোগী।
দেবাশিসের কথায়, ‘‘২০১৬-১৭ সালে আবাস যোজনায় আবেদন করেছিলাম। তখন কিছু পাইনি। আমার ব্যাঙ্কেও টাকা ঢোকেনি। কিন্তু পোর্টালে দেখাচ্ছে ধাপে ধাপে টাকা এসেছে। আমি কোনও টাকা পাইনি। কে আমার নামে টাকা তুলেছেন, তার তদন্ত চাইছি।’’ একই অভিযোগ করেছে কংগ্রেসও। রঘুনাথপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি তারক প্রামাণিক বলেন, ‘‘পুরসভা টাকা তুলে খেয়ে নিয়েছে। যে টাকা পায়নি, সে বাড়ি করবে কী ভাবে?’’ এ প্রসঙ্গে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এই অভিযোগ প্রথম এল আমার সামনে। আমি তদন্ত করে দেখছি। কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’