উপনির্বাচনেও অশান্তি ছড়াল উত্তর চব্বিশ পরগনার ভাটপাড়ায়। বুধবার সকালে তৃণমূলের এক বুথ সভাপতিকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ওই তৃণমূল নেতার নাম অশোক সাউ। বুধবার সকালে তিনি যখন বাজারে বের হন, তখন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। কয়েকজন দুষ্কৃতী পায়ে হেঁটে এসে তাঁকে ঘিরে ধরে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। পরে তাঁকে লক্ষ্য করে সকেটও ছোঁড়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পড়ে অবশ্য মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার।
গুলিতে নিহত ওই তৃণমূল নেতা দলের প্রাক্তন ওয়ার্ড সভাপতি অশোক সাউ। চায়ের দোকানে ছিলেন তিনি । সেই দোকানে ঢুকেই গুলি চালায় বেপরোয়া দুষ্কৃতীরা। এলোপাথাড়ি বোমাও ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। দোকানের জিনিসপত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। নিহত নেতার পরিবারের অভিযোগ, গুলি চালিয়েছে তৃণমূলই। তাই প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনাকে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ, বেআইনি কাজে রাজি না হওয়াতেই খুন হতে হল অশোক সাউকে।
এদিন রাজ্যের যে ৬টি বিধানসভায় উপনির্বাচন হচ্ছে সেই তালিকায় রয়েছে নৈহাটির বিধানসভার উপনির্বাচন। তারই মধ্যে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে এদিন তৃণমূলের ওই বুথ সভাপতি চায়ের দোকানে ঢুকেছিলেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা ঢুকে তাঁর উপর হামলা চালায়। এবিষয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ''কী হল আমরা বুঝতে পারিনি। হঠাৎ বাইরে থেকে দুম দাম শব্দ। আমরা ভেবেছি বাজি ফাটছে। হঠাৎ দেখি ভিতরে দুম দাম চলছে। বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। যে টার্গেট ছিল তাকে শেষ করতে ঢুকেছিল।''
এবিষয়ে ব্যারকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এবিষয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই তাঁর কথা হয়েছে। একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসপি অলোক রাজোরিয়া জানান, তিনজন চায়ের দোকানে আসে। অশোক সাউকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় । অশোক সাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পিঠের উপরের দিকে লেগেছে। ওনার উপরে ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ আগেও একবার হামলা হয়েছিল। আমরা সমস্ত প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। খুব শীঘ্রই আমরা এটার কিনারা করব।
এদিকে বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহের অভিযোগ, প্রিয়াঙ্কু পাণ্ডের ওপর যারা গুলি চালিয়েছিল , তারাই এদিন তৃণমূল নেতার ওপর গুলি চালিয়েছে। থানা থেকে সামান্য দূরত্বেই এই চায়ের দোকান। সেখানেই এমন ঘটনা ঘটায় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অর্জুন সিং-এর অভিযোগ জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের গোষ্ঠী রয়েছে এই খুনের পেছনে। এদিকে তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দের অভিযোগের তির অর্জুনি সিং-এর দিকেই।
প্রসঙ্গত, বাংলার রাজনীতিতে ভাটপাড়া মানেই যেন অশান্তি। এখানে গুলি চলার ঘটনা কোনও নতুন নয়। এদিকে ভাটপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংকে গতকাল সিআইডি তলব করেছিল। তবে হাই কোর্টে স্বস্তি পান অর্জুন। এই আবহে নৈহাটি ভোটের আগের দিন সিআইডির তলব এড়িয়ে যান তিনি। তবে ভোটের দিন সকাল সকাল সেই অর্জুনের এলাকায় চলল গুলি।