সরকারি কর্মীদের সময়ানুবর্তিতা ও কর্মসংস্কৃতি মজবুত করতে কড়া মনোভাব নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অর্থ দফতর। সাম্প্রতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী, নবান্নে অর্থ দফতরের কর্মীদের কেবলমাত্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতেই হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে; খাতায় সইয়ের পুরনো পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। অর্থ দফতরের উপসচিব নাভেদ আখতার নির্দেশ দিয়েছেন যে, পদোন্নতি বা বদলির ক্ষেত্রে কর্মীদের যোগদানের দিনেই বায়োমেট্রিক ডেটা আপডেট করতে হবে। অন্যদিকে, অন্য দফতরে বদলি হয়ে গেলে ওই কর্মীর বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা বন্ধের জন্য আগাম জানাতে হবে।
২০২৩ সালের মে মাসে নবান্নে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হলেও, সেই সঙ্গে খাতায় সইয়ের সুবিধা বজায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক কর্মী বায়োমেট্রিক পদ্ধতি উপেক্ষা করে কেবল খাতায় সই করছেন। এই অনিয়মই অর্থ দফতরকে বাধ্য করেছে একমাত্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করতে। অর্থ দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা ব্যবহারে কর্মীদের অনীহা মাসের শেষে রিপোর্ট তৈরিতে সমস্যা তৈরি করছে, যা এই নির্দেশিকার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই কর্মসংস্কৃতি মজবুত করতে জোর দিয়েছেন। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নবান্নের বিভিন্ন দফতর পরিদর্শনের সময়ও দুপুর সাড়ে ১২টার পর মাত্র ২৫ শতাংশ কর্মীর উপস্থিতি দেখে কর্মীদের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই সময় থেকেই অফিসে সকাল ১০.১৫ থেকে বিকেল ৫.১৫ পর্যন্ত উপস্থিত থাকার নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়।
উল্লেখ্য, নবান্নের হাজিরা পদ্ধতি বদলাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ‘ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক মেশিন’ বসানো এবং হাজিরা নিশ্চিত করতে অনিয়ম রোধে অতীতেও বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবুও বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার সাফল্য না আসায় এবার খাতায় সই তুলে দিয়ে একমাত্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কর্মীদের হাজিরা নিশ্চিত করার প্রয়াস নিচ্ছে অর্থ দফতর।