বিষ্ণুপুরে অফিস ঘর থেকে উদ্ধার ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ, খুন নাকি আত্মহত্যা? কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা
প্রতিদিন | ১৪ নভেম্বর ২০২৪
অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যু বিষ্ণুপুরে! মঙ্গলবার বিকেলে অফিস ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ। ব্যবসায়ীর নাম শ্যামাপদ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বিষ্ণুপুর শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়। আত্মহত্যা না কি খুন? তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিষ্ণুপুরে (Bishnupur) শ্যামাপদের জামা, গেঞ্জির কারখানা রয়েছে। সঙ্গে রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসাও ছিল। এছাড়া প্রোমোটারিও করতেন। কিছুদিন আগে একটি বাংলা ছবিতে বিনিয়োগ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিছুদিন যাবৎ ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তা নিয়ে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ব্যবসায়ী আত্মঘাতী হয়েছেন।
কর্মচারীদের থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ১টার দিকে বাড়ির কাছের অফিসে আসতেন শ্যামাপদ। তবে মঙ্গলবারে ১১টার সময় অফিসে চলে আসেন তিনি। অফিসের পিছনে একটি আলাদা ঘরে তিনি বিশ্রাম নিতেন। ঘটনার দিন সেই ঘরেই কাজ করছিলেন। বিভাস রায় নামে এক কর্মচারী দুপুরে খেতে যাওয়ার আগে ওই ঘরেই মালিককে দেখেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, মালিক অফিসেই ছিলেন। সেই সময় সময় ব্যবসায়ীর ঘনিষ্ঠ এক কর্মচারী অফিসে কাজ করছিলেন। তিনি অর্থনৈতিক দিকটি দেখেন। পরে ওই কর্মচারী খেতে বেরিয়ে যান বলে জানিয়েছেন বিভাস।
বিকেল চারটে নাগাদ বিভাস ফিরে আসেন। সেই সময় দেখেন, অফিসের বাইরে শ্যামাপদবাবুর বাইক রয়েছে। তিনি ভিতরে যাওয়ার পর মালিকের কোনও সাড়াশব্দ পাননি। সন্দেহ হতেই তাঁর ঘরে গিয়ে দেখেন ওই ব্যবসায়ীর দেহ ঝুলছে। সেই সময় কেউ ছিলেন না বলেই জানিয়েছেন তিনি। খবর পাঠানো হয় পুলিশে। বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।
কর্মচারী বিভাস রায় বলেন, “দুপুর ২টোর দিকে আমি খেতে বেরিয়ে যাই। পার্থ চন্দ্র অফিসে ছিলেন। পরে তিনিও বেরিয়ে যান। সাড়ে চারটের দিকে ফির এসে দেখি বাইরে মালিকের বাইক রয়েছে। অন্যদিনের মতো অর্ধেক নামানো শাটার তুলে ভিতরে গিয়ে নিজের কাজ করছিলাম। অন্যদিন আমরা গেলে মালিক বুঝতে পারতেন। কিন্তু মঙ্গলবার কোনও সাড়াশব্দ পাইনি। সন্দেহ হতেই পাশের ঘরে গিয়ে দেখি ওঁর দেহ ঝুলছে। কেন এই রকম করল, জানি না। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। কিছুদিন আগে একটি বাংলা মুভিও করেছিলেন। সেখানে অনেক টাকা লস হয়েছে শুনেছিলাম। আমাদের সেভাবে কিছু বলতেন না।” অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ।