অর্ণব আইচ: পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার জন্য টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল থেকে এই ধরনের অভিযোগ ওঠায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী আসরে নেমে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেইমতো রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ যৌথভাবে তদন্তে নেমেছে। ইতিমধ্যে তাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১০ জন। কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত ২ জন। কীভাবে এই দুর্নীতি ঘটল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কোথাও কোথাও ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ আছে বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। অর্থাৎ ট্যাব দুর্নীতিতে স্কুলে কোনও কোনও কর্মীরা জড়িত থাকতে পারেন। হাতে আসা তথ্য দেখে প্রাথমিকভাবে তা মনে করছে পুলিশ।
বুধবার প্রেস বিবৃতিতে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে ৫৬ টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে ৫, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ এবং চোপড়া থেকে কলকাতা পুলিশের জালে দুজন ধরা পড়েছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সরাসরি কোনও যোগ পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এরা একই গোষ্ঠীর সদস্য নাকি প্রত্যেকে পৃথকভাবে এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ব্যাঙ্কের লেনদেন। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড কীভাবে এবং কাদের মাধ্যমে অভিযুক্তরা পেয়েছিল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জেলাগুলি থেকে অহরহ এই অভিযোগ আসছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ঝাড়গ্রামে।
উল্লেখ্য, স্কুলের উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প চালু হয়েছে সেই করোনাকাল থেকে। প্রত্যেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় সরকারের তরফে। তা দিয়ে ট্যাব কিনে অনলাইন ক্লাস করতে পারে পড়ুয়ারা। এখন দেখা যাচ্ছে, সেই ট্যাব কেনার টাকাতেই বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে। মূলত অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রেই এই গরমিল চোখে পড়েছে। বর্ধমানের একটি স্কুলে এই ঘটনা প্রথম চোখে পড়ে। সেখানে ২৮ জনের অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা গায়েব। বর্ধমান সাইবার থানায় অভিযোগ জানালে তদন্ত শুরু হয়। এর পর অন্যান্য জেলা থেকেও এক অভিযোগ ওঠে। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নজরে পড়তেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা দ্রুত দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্য প্রকল্পের অর্থ নিয়ে কারা জালিয়াতি করেছে, তার জন্য তদন্ত শুরু হয়।