সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার মান আরও বাড়ছে। এবার পিপিপি মডেলের এআই প্রযুক্তির সিটি স্ক্যান মেশিনও বসানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা চালু হতে চলেছে। সিটি স্ক্যান করাতে গেলে রোগীদের আর বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না। বিনামূল্যে হাসপাতালেই পরিষেবা পাবেন রোগীরা। এমনকী হাসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটের শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, সিটি স্ক্যান মেশিন বসানোর জন্য আলাদা ঘর করা হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় মেশিনপত্র চলে এসেছে। এবার শেষ মুহূর্তের পরিদর্শন হয়ে গেলেই কয়েকদিনের মধ্যেই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এইচডিইউ ইউনিট চালু হয়। দিবারাত্র চিকিৎসা পরিষেবা, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের সুবিধা মেলে ওই ইউনিটে। মুমূর্ষু রোগীদের ওই ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হয়। বর্তমানে ওই ওয়ার্ডেই মাত্র ছ’টি বেড রয়েছে। ফলে, বেড ভর্তি থাকলে রোগীদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। এবার ওই ওয়ার্ডেই বেডের সংখ্যা ৬টি থেকে বাড়িয়ে ২৪টি করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে অবশ্য ১৮টি করা হবে। তারপরে আরও ৬টি বাড়ানো হবে।
এইচডিইউ ইউনিটের পাশেই রয়েছে ডায়ালিসিস ইউনিট। ওই ইউনিটে মাত্র ৫টি শয্যা ছিল। কিন্তু ডায়ালিসিসের চাহিদা যেভাবে বেড়েছে তাতে আরও শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। ওই ইউনিটে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি হচ্ছে। এই ডায়ালিসিস ইউনিটটির স্থানও পরিবর্তন করা হবে।এবার আউটডোরের কাছে এআই প্রযুক্তির সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হচ্ছে। এবার হাসপাতালেই সিটি স্ক্যান করাতে পারবেন রোগীরা। এতদিন বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মোটা টাকা খরচ করে সিটি স্ক্যান করাতে হতো রোগীদের। শুধু তাই নয়, মাইক্রো ও অর্থপেডিক সার্জারির জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ আনারও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। মেশিনপত্র চলে এলেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালেই রোগীদের মাইক্রো সার্জারি করা হবে। সিটি স্ক্যান পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল থেকে পাঠানো রোগীদের বিনামূল্যেই পরিষেবা দেওয়া হবে। এক বছর আগেই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে পিপিপি মডেলের সিটি স্ক্যান মেশিন আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তারপরেই মেশিন বসানো হয়েছে।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি, পুরুষ, মহিলা, শিশু সহ মোট ২৮৬টি বেডের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে জায়গা কম থাকায় থাকায় ২৫৬টি বেড রয়েছে। এবার ওই চারতলা বিশিষ্ট ভবনে আরও ১০০টি নতুন বেড রাখা হবে। তাছাড়া পাইপলাইনের মাধ্যেমে অক্সিজেন সাপ্লাই করা হবে।
এমনিতেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের উপর পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলার একাংশের বাসিন্দারা নির্ভরশীল। হাসপাতালে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড পাওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এবার এইচডিইউ ইউনিটের শয্যা বাড়লে অনেক রোগী সেখানে পরিষেবা পাবেন। ফলে রেফারের হার আরও কমবে বলে আশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের রোগীদের সিটি স্ক্যান বিনামূল্যেই করতে পারবেন। এছাড়া বাইরের রোগীরাও ৬০ শতাংশ ছাড়ে সিটি স্ক্যান পরিষেবা পাবেন। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার মান আরও বেড়ে যাবে।-নিজস্ব চিত্র