সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলা। এই স্থানেই রয়েছেন নবদ্বীপের গ্রাম্যদেবী পোড়ামা, মা ভবতারিণী এবং ভবতারণ শিবমন্দির। রাস পূর্ণিমায় প্রায় ৮২ বছর ধরে এই স্থানেই পূজিত হচ্ছেন মহিষাসুরমর্দিনী মাতা। রাসে প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশি বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো হলেও একমাত্র মহিষাসুরমর্দিনী প্রতিমা রাস পূর্ণিমায় তিনদিন পুজো হয়।
১৫ নভেম্বর শুক্রবার নবদ্বীপের রাস পুজো। বুধবার থেকে রাসের এই মহিষাসুরমর্দিনী মাতার পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার ত্রয়োদশীতে সপ্তমী, চতুর্দশীতে অষ্টমী, আর পূর্ণিমায় নবমী পুজো হয়। দশমীতে দেবীকে সকালে দই-চিঁড়ে ভোগ দেওয়া হয়।
শ্রীশ্রী মহিষাসুরমর্দিনী মাতার পুজোর আগে প্রথমে গ্রাম্যদেবী পোড়ামার পুজো দেওয়া হয়। উল্লেখ্য,এখানে একটি ছোট ঘরে মহিষাসুরমর্দিনী মাতার নিত্যপুজো হয়। এখানে একটি ছোট শিবলিঙ্গ রয়েছে। রাস উপলক্ষ্যে মহিষাসুরমর্দিনী মাতার প্রতিমার উচ্চতা ২৪ ফুট করা হয়। সিংহের ওপর অধিষ্ঠিত দশভুজা— ত্রিশূল দিয়ে অসুরকে বধ করছেন। দেবীর পদতলে রয়েছে মহিষ। রাস পূর্ণিমায় মণ্ডপের এক পাশে পূজিত হন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু। শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই পুজো ঘিরে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। নবদ্বীপ শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই মহিষাসুরমর্দিনী পুজো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন।
পোড়ামাতলা রয়্যাল সোসাইটির অন্যতম দুই কর্মকর্তা শচীদুলাল সাহা ও রণধীর পাল জানান, রাস উৎসব বলতে গেলে নবদ্বীপবাসীর জাতীয় উৎসব। এই উৎসব দেখতে দেশ বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় করেন। নবদ্বীপের এই রাস উৎসবে বারোয়ারিগুলির মধ্যে যাতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে, সে জন্য আমরা কমিটির পক্ষ থেকে কয়েক বছর ধরে পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছি। মূল উদ্দেশ্য, নবদ্বীপের ঐতিহ্যপূর্ণ রাস উৎসবকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া।