• বহরমপুরে ভৈরব পুজোর চাঁদার জুলুম, ক্ষোভে ফুঁসছে শহরবাসী
    বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: কার্তিক মাসের শেষ দিনে বহরমপুরে আড়ম্বরের সঙ্গে ভৈরব পুজো হয়। এবারও সেই পুজোর আয়োজন করছে পুজো উদ্যোক্তারা। আর পুজোর জন্য ভাগীরথীর পাড় বরাবর রাস্তায় শুরু হয়েছে চাঁদার জুলুম। ব্যস্ত রাস্তা আটকে চারচাকা গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় টোটো থেকেও চাঁদা আদায় করছে উদ্যোক্তারা। ভাগীরথীর পাড় বরাবর বেশ কয়েকটি বড় পুজোর আয়োজন করা হয়। এই ভৈরব পুজো ঘিরে মানুষের মধ্যে উন্মাদনা দিনদিন বাড়ছে। কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর জন্য চাঁদার জুলুম নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। কারণ, ব্যস্ত রাস্তা আটকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে চাঁদা আদায়। 


    মঙ্গলবার রাতে বহরমপুরে কৃষ্ণনাথ কলেজের পার্শ্ববর্তী খেয়াঘাটের কাছে চাঁদা আদায় করছিল বেশ কিছু যুবক। কয়েকটি ব্যক্তিগত চারচাকা গাড়িতে চাঁদা চাইতেই তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন চালকরা। বেশকিছু টোটো চালকের কাছ থেকেও চাঁদা আদায় করে তারা। বুধবার দুপুরে খাগড়া শ্মশানের কাছে রাস্তার উপরেই গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করতে থাকে বেশ কয়েকজন যুবক। 


    দুর্গাপুজোর পর কালীপুজো। সদ্য শেষ হয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজো। তারপর ভৈরব পুজোর আয়োজন হচ্ছে শহর জুড়ে। এই পুজোর জন্য চাঁদা চাওয়ায় কোথাও কোথাও বাড়তি সমস্যার মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গাড়িচালক রমেন হাজরা বলেন, আমি একটা ছোট মালবাহী গাড়ি চালাই। স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে মালপত্র নিয়ে যাই। ভাগীরথীর ধারের এই রাস্তা দিয়ে দিনে অন্তত দুই তিনবার যাতায়াত করতে হয়। ভৈরব পুজোর জন্য দুজনকে চাঁদা দিয়েছি। তারপরেও  চাঁদা চাইছে। এটা খুব খারাপ ব্যাপার। 


    বহরমপুরের বাসিন্দা শৈলেন মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুজো ও কালীপুজো মিলিয়ে প্রায় ৬০০০ টাকা চাঁদা দিয়েছি। এবার ভৈরব পুজোর জন্য আবার চাঁদা চাওয়া হচ্ছে।  এত চাঁদা একসঙ্গে চাইলে তো খুব মুশকিল। 


    উল্লেখ্য, বহরমপুর শহরের বিভিন্ন পাড়ায় বিভিন্ন নামে পুজিত হয় ভৈরব। কোথাও বোল্ডারবাবা, কড়াইবাবা, নিমবাবা তো, কোথাও ডাববাবা, তেঁতুলবাবা ও প্রেমবাবা। রয়েছে গলিবাবাও। তবে এরমধ্যে অন্যতম হল খাগড়ার ভৈরবতলার ভৈরববাবা এবং সৈদাবাদের নিমবাবার মতো পুজোগুলি। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ এখানে এসে পুজো দেন। 


    পুজো উদ্যোক্তাদের অবশ্য দাবি, প্রতিবছর আড়ম্বরের সঙ্গে পুজো করতে খরচ হয়। সাধারণ মানুষের সাহায্য ছাড়া কোনওভাবেই তা সম্ভব নয়। তবে অধিকাংশ জায়গায় চাঁদার কোনও জুলুম নেই।  কেউ কেউ হয়তো আবেগের বশে করে ফেলেছে। 


    বহরমপুর থানার এক পুলিস অফিসার বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সাধারণ মানুষের সমস্যা হয় এমন কোনও কিছু বরদাস্ত করা হবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)