সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: ভাঙা পায়ে হাঁটতে পারেন না। একইসঙ্গে শ্বাসকষ্ট, দুই চোখেই সমস্যা। প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপরও বুধবার লাঠিতে ভর করে ভোট দিতে বুথে আসেন লক্ষ্মী বর্মন। বয়স ৫৯। নিজের পুত্রবধূর হাত ধরে নগর সিতাই নেতাজি বিদ্যাপীঠ স্কুলের বুথে ভোট দিলেন তিনি। কাঁপা কাঁপা গলায় বলছিলেন, ভোটটা দিতে এলাম যাতে দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) প্রার্থী জিততে পারেন। দিদির দেওয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় ওষুধ কিনে খাচ্ছি। ওই ওষুধই বাঁচিয়ে রেখেছে। গরিব মানুষ আমরা। একমাত্র ছেলের সংসারেও নুন আনতে পান্তা ফুরায়। দিদি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিচ্ছে বলেই ওষুধ কিনতে পেরেছি। দুটো চোখেই ছানি পড়েছিল, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সহায়তায় চোখের অপরেশন করিয়েছি। এখন আবার চোখ দিয়ে জল পড়ে। আবারও ডাক্তার দেখাব। স্বাস্থ্যসাথী আছে বলেই ভরসা পাচ্ছি। না হলে তো চিকিৎসাই করাতে পারতাম না।
পাশে সেই সময়ে দাঁড়িয়ে শাশুড়ির কথা শুনছিলেন পুত্রবধূ সবিতা বর্মন। সবিতা বলেন, আমিও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাই। এতকিছু পাচ্ছি ভোটটা তো দিদির দলকেই দিতে হবে। বুথের কিছুটা দূরেই তৃণমূল কর্মীরা ভোটার সহায়তা কেন্দ্র করেছে। তাঁরাও কয়েকজন শাশুড়ি-বউমার কথা শুনছিলেন। কিছুটা তৃপ্তির হাসি তৃণমূল কর্মীদের মুখেও।
এদিন সকাল থেকে সিতাইয়ের কোনও বুথেই ঝামেলা হয়নি, নির্বিঘ্নে ভোট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ পুলিস কর্মীরাও ভোটাদের সহায়তা করছেন। বয়স্ক ও অসুস্থ ভোটারদের বুথ পর্যন্ত যাওয়ার জন্য মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে টোটোও। তৃণমূল কর্মীরা ভোটারদের সহায়তা করতে ময়দানে থাকলেও কোথাও দেখা মেলেনি বাম-বিজেপি নেতা-কর্মীদের। এদিন ভোট দিতে আসা মানুষের দাবি ছিল, তৃণমূল সরকার এতকিছু দিচ্ছে তাঁদের। তাই তাঁরাও ভোটে তার প্রতিদান দিয়েছে।