• বিপ্লব শুধু ফেসবুকে! ‘সংগ্রামী’ মঞ্চ বাঁচাতে শাহরুখের রোমান্সই ভরসা এসএফআইয়ের
    বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • সোহম কর, কলকাতা: তর্ক-বিতর্ক, স্লোগান, রিল, গান, কবিতা—এতটুকু অভাবে নেই সিপিএমের নব্য প্রজন্ম। টুম্পা সোনা থেকে ইনসাফ যাত্রা, সব হয়েছে। লাইক-শেয়ারে উপচে পড়েছে বামেদের ফেসবুক পেজ। ওই পর্যন্তই। ভোটযন্ত্রে ‘লাইক’ টানতে কিন্তু একেবারে ব্যর্থ নব্য প্রজন্ম। জামানত বাঁচান সেই সেলিম-সুজন। এভাবে আর কতদিন? তাই তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে মরিয়া এসএফআই এখন ভরসা রাখছে শাহরুখ খানের উপর। পড় পর্দায় তিনি অবশ্য রক্তিম অভিনন্দন জানাবেন না। বরং সেখানেও থাকবে তাঁর আদি-অকৃত্রিম রোমান্স। এসএফআই, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে আজ, বৃহস্পতিবার ‘সংগ্রামী বইপত্র’র মঞ্চে বিকেল ৫টায় ‘বীর জারা’ দেখানো হবে। বামেদের ছত্রচ্ছায়ায় শাহরুখ খানের ‘বীর জারা’ ছবির স্ক্রিনিং? চোখ কচলে আবার দেখতে হয়। সিনেমা মানে লাল ঝান্ডা এখন আর ঋত্বিক ঘটক দেখাচ্ছে না? এমনকী হাল আমলের ‘জয় ভীম’ও নয়?


    গত ১১ তারিখ শুরু হওয়া এই বইয়ের স্টলে আলোচনা সভা হয়েছে। পথশিশুদের গল্প পড়ে শোনানো, ক্যুইজও হয়েছে। এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক দীধিতি রায় বলছিলেন, ‘ভারতেও প্রেমের ভাবনাকে তুলে ধরার জন্য এই ছবি নির্বাচন করা হয়েছে। ওই সিনেমায় দু’টি ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে ভালোবাসা দেখানো হয়েছে। আমরা বুকস্টলকে শুধুই বই বিক্রির স্থল হিসেবে দেখি না। এই মুহূর্তে আরএসএস ভারতের বহুত্ববাদ, ঐক্যের সংস্কৃতি ভুলিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে আমরা ওটাকেই কাউন্টার করছি।’ দীধিতি আরও বলেন, ‘শাহরুখের রোমান্স ভরসা—এভাবে আমরা দেখছি না। এই ছবিতে যেভাবে বৈচিত্র্যের মধ্যে ভালোবাসাকে উদযাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে, আমরা বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে সেটাই দেখাচ্ছি।’


    তবে সিনেমা দেখিয়েই ক্ষান্ত থাকছে না এসএফআই। তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানার জন্য তারা আদাজল খেয়েই নেমেছে। আগামী শুক্রবার এসএফআই রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে শুরু হচ্ছে ‘ইনকিলাব’ স্টল। কী হবে সেখানে? এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলছেন, ‘২০১৭ সালে বুকস্টলটা ছিল। তারপর বন্ধ হয়ে যায়। আবার নতুন করে খোলা হচ্ছে। এটা নতুন প্রজন্মের জন্য একটা আড্ডা জোন। এখানে মতের আদান প্রদান হবে। তাঁদের মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করা হবে। ছাত্রদের সঙ্গে এসএফআইয়ের একটা মেশার জায়গা হবে।’ ফেসবুক বিপ্লবীদের ইন্টারনেট থেকে পার্টি অফিসে নিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম। সেটা কখনও সিনেমা দেখিয়ে, কখনও পার্টি অফিসকে ‘আড্ডা জোন’ তৈরি করে। প্রশ্নের উত্তর তো সেই কানাগলিতে গিয়ে আটকে যায়। তা হল, সিনেমা-আড্ডা দিয়ে কি কাস্তে হাতুড়ি তারায় ভোট বাড়বে? ‘দেখা যাক!’ এটুকু বলেই মিছিলে মিশে যান এক এসএফআই নেতা। 
  • Link to this news (বর্তমান)